মোস্তফা কামাল মামুন, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
চলমান ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষায় কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীর নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ উঠে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ইংরেজি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষায় মোবাইলে প্রশ্ন পাওয়ার বিষয়টি, তবে এসএসসি পরীক্ষা শুরুর দিন থেকে এর অভিযোগ উঠলেও পরে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) ইংরেজি দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষার দিনে প্রশাসন নড়েচড়ে বসে।
বিষয়টি শুনে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মোঃ কামরুল ইসলাম, শিক্ষা বোর্ডের সচিব প্রফেসর মোঃ জহির উদ্দিন, কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোঃ রেজাউল করিম, জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ শামসুল আলম,পুলিশ সুপার আল আসাদ মোহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম, থানার অফিসার ইনচার্জ, সার্কেল এএসপি রাতেই ভুরুঙ্গামারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সহ তার অফিসে রাত সাড়ে নয়টা থেকে রাত সাড়ে বারোটা পর্যন্ত প্রায় ৩ ঘন্টার রুদ্ধদার বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে বের হওয়ার সময় উপস্থিত গণমাধ্যমের কর্মীরা প্রশ্ন করতে চাইলে কেউই কোনো উত্তর না দিয়ে দ্রুত তাদের নিজ নিজ গাড়িতে উঠে উক্ত স্থান ত্যাগ করেন।
পরে গণমাধ্যমের কর্মীগণ তাদের পিছে থানা পর্যন্ত এসেও দেখা না পেলে থানার ভিতরে প্রবেশ করে এ বিষয়ে জানতে চাইলে, থানায় উপস্থিত সার্কেল অফিসার ও অফিসার ইনচার্জ এ বিষয়ে কথা বলতে প্রথমে রাজি না হলেও পরে সংক্ষিপ্ত আকারে ব্রিফ করেন ভূরুঙ্গামারী সার্কেলের দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মকর্তা এএসপি মোঃ মোরশেদুল হাসান। তিনি বলেন, আজকে একটি অভিযোগের মত বলা যায়, গুজবের মতো বিষয় এসেছিল যার পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষা বোর্ডের অভিযোগের ভিত্তিতে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। অভিযোগের বিষয় কি ছিল জানতে চাইলে তিনি উত্তরে বলেন, “প্রশ্ন ফাঁসের”। তিনি আরো বলেন, বিষয়টি যেহেতু শিক্ষা বোর্ডের প্রতিনিধির অভিযোগের ভিত্তিতে হয়েছে, সে কারণে মামলা প্রক্রিয়াধীন। তদন্তের পর বিষয়টি বলা যাবে।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আব্দুর রহমানকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমার উর্ধতন কর্মকর্তা এসেছেন, আপনি স্থানীয় হিসেবে আপনার তো প্রথম জানার কথা, অভিযোগটি চার দিন থেকে উঠছে, আমরা জেনেছি আপনাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কেন আমাকে জিজ্ঞাসা করার জন্য আনা হবে? তিনি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা অথচ এ বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার মতো কথা বলেন। এ বিষয়ে কাউকে আটক করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন যে, না এ বিষয়ে কাউকে আটক করা হয়নি, অন্যদিকে থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, তিনজন কে আটক করে থানায় নেয়া হয়েছে। প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে কিনা, এর জবাবে তিনি এক সময় বলেন যে, এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে, গণমাধ্যম কর্মীগণ পুনরায় তাকে প্রশ্ন করেন তাহলে আপনি এটা স্বীকার করছেন যে প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে-তিনি উত্তরে বলেন এটা আমি কখন বলেছি? এটা কেন্দ্র সচিব জানবে। পরে তিনি আর কথা না বাড়িয়ে বলেন, যদি ফাঁস হয়ে থাকে তবে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে অভিযুক্ত নেহাল উদ্দিন পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় এর কেন্দ্র সচিব, প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমান, সহকারী শিক্ষক জোবায়ের ও রাসেল কে আটক করে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে।