পার্থ বেপারী ঝালকাঠি প্রতিনিধি :
বরিশাল খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি জেলার গাবখান-ধানসিড়ি ইউনিয়ন পরিষদের পাশে ছত্রকান্দা এলাকায় একটি যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রন হারিয়ে পুকুরে পড়ে নিহত ১৭ জনেরমধ্যে ১৫জনের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। আহত ৩৫ জনের মধ্যে ৩১ জন ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ও ৪জন বরিশাল শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে। নিহত ১৭ জনের মধ্যে ১৫জনের পরিচয় শনাক্ত করা হলেও ২জন অজ্ঞাত রয়েছে।
সকাল ৯টায় ভান্ডারিয়া থেকে বরিশালের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী এম ডি বাসার স্মৃতি গাড়ীটি প্রায় ৭০/৮০জন যাত্রী নিয়ে যাওয়ার পথে ঝালকাঠির ছত্রকান্দা এলাকায় এদূর্ঘটনায় পতিত হয়। দূর্ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় প্রশাসন ব্যাপক উদ্ধার অভিযান শুরু করে। ঘটনার পর পরেই ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক ও পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যায় এবং উদ্ধার তৎপরতা সম্পর্কে খোজখবর নেয়। জেলা প্রশাসক ফারহা গুল্ নিঝুম দূর্ঘটনার কারন উধঘাটনের জন্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে প্রধান করে ৫সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে ৩ দিনের মধ্যে রিপোর্ট প্রদানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এদিকে দূর্ঘটনার পর বরিশাল ঝালকাঠি খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কে সকল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় কয়েক কিঃমিঃ জুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়।
আহত যাত্রীরা জানায়, সকাল সাড়ে ৯টায় ভান্ডারিয়া থেকে বরিশালের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী এম ডি বাসার স্মৃতি গাড়ীটি অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে যাচ্ছিল। দূর্ঘটনাস্থলে আসার সময় গাড়ী চালক সুপারভাইজারের সাথে কথা বলছিল। এসময় হঠাৎ করে ছত্রকান্দা এলাকায় ঘটনাস্থলে পৌছলে চালক নিয়ন্ত্রন হারিয়ে গাড়িটি রাস্তার পার্শবর্তী পুকুরের মধ্যে পরে যায়। বড় আকারের পুকুরে অনেক পানি থাকায় পুরো বাসটি পানির নীচে তলিয়ে গেলে কিছু যাত্রী সাতরে তীরে আসতে সক্ষম হলেও ১৭জন যাত্রী বাসের মধ্যে আটকে পরে পানিতে ডুবে মারা যায়। নিহতরা হলেন তারেক রহমান (৪৫)পিং পান্না মিয়া, ভান্ডারিয়া, সালাম মোল্লা (৬০) পিং-মোজাফ্ফর আলী মোল্লা, শাহীন মোল্লা (২৫) পিতা: সালাম মোল্লা ভান্ডারিয়া, খাদিজা বেগম (৪৩) স্বামী- মাও: নজরুল ইসলাম, খুসবু আক্তার (১৭) পিং- মাও: নজরুল ইসলাম গ্রাম-নিজামীয়া, রাজাপুর, সুমাইয়া (৬) পিতা: জালাল হাং, পশুরী বুনিয়া ভান্ডারিয়া, আদ্বুল্লাহ (৮) পিতা: দেলোয়ার হোসেন, চর বোয়ালিয়া বাকেরগঞ্জ, রহিমা বেগম (৬০) স্বামি: মৃত লাল মিয়া ও আবুল কালাম পিতা: মৃত লাল মিয়া রিজার্ভ পুকুরপাড়, ভান্ডারিয়া, রিপা মনি (২) পিতা: রিপন, আইরিন আক্তার (২২) স্বামী: রিপন, মেহেন্দীগঞ্জ, নয়ন (১৬) পিতা: নুরুল ইসলাম দঃরাজাপুর, রাবেয়া বেগম (৮০) স্বামীঃ ফজলুল হক মিয়া উত্তর শিয়ালকাঠি, সালমা আক্তার মিতা (৪২), স্বামী জিয়াউর রহমান,বাশবুনিয়া কাঠালিয়া।
এদিকে নিহতদের দাফনের জন্য পুলিশের আইজিপির পক্ষ থেকে প্রতিটি পরিবারকে ৬হাজার টাকা দেয়া হয় বলে ওসি নাসির উদ্দিন জানান। এছাড়া দূর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা ঝালকাঠি-২ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আমির হোসেন আমু,ঝালকাঠি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এড. খান সাইফুল্লাহ পনির।
এ ব্যাপারে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার সার্কেল (রাজাপুর) মাসুদ রানা জানায়, দূর্ঘটনার পর জেলা পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসের একাধিক টিম উদ্ধার অভিযান পরিচলনা করেন। এপর্যন্ত ১৭জন নিহত ও ৩৫জন আহত হয়ে হাসপাতালে রয়েছে।