ওয়াসিম শেখ, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি :

চাঁদাবাজী মামলা মহামান্য আদালতে দাখিল করায় মামলার বাদীকে হত্যার উদ্দেশ্যে দাড়ালো ছুড়ি দিয়ে কোপালেন মামলার আসামী চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম ভুইয়া ও তার গুন্ডা বাহিনী। ঘটনাটি ঘটেছে (১১ আগষ্ট ২০২৩ইং) তারিখে বিকেল ৩টার দিকে বেলকুচি উপজেলার ভাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়নের তামাই গ্রামের চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলামের বাড়ির সামনে এঘটনা ঘটে। চেয়ারম্যানের গুন্ডা বাহিনী থেকে বাঁচতে গুরুতর রক্তাক্ত অবস্থায় মামলার বাদী ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাক খান মোটরসাইকেল যোগে বেলকুচি থানায় অফিসার ইনচার্জ এর কাছে আসলে থানা পুলিশ প্রথমে সুচিকিৎসা গ্রহণ করার পরামর্শ দেন।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, ভাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়নের উত্তর বানিয়াগাঁতীতে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্পের সভাপতি হিসেবে মনোনিত হন ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাক খান। প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্পের সভাপতি চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম নিজে মনোনিত না হওয়ায় বা তার মনোনিত প্রার্থী না হওয়ায় আশ্রয়ন প্রকল্পের কাজ বাঁধা গ্রস্ত করতে প্রকল্পের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাকের নিকট থেকে বিভিন্ন সময় চাঁদাদাবী করত। চাঁদা দেওয়ার হাত থেকে বাঁচতে ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাক খান সিরাজগঞ্জ বিজ্ঞ দ্রুত বিচার আদালতে গত ৩ আগষ্ট ২০২৩ইং তারিখে মামলা দায়ের করেন। বিজ্ঞ আদালতে মামলা করার অপরাধে বিভিন্ন সময়ে মামলার বাদী আব্দুর রাজ্জাককে হত্যার উদ্দেশ্যে ভয়ভীতি প্রদর্শন করত। এরই এক পর্যায়ে (১১ আগষ্ট ২০২৩), শুক্রবারে মামলার বাদী আব্দুর রাজ্জাক তার আত্মীয় তামাই গ্রামে মফেল সরকার এর কুলখানী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে যায়। আব্দুর রাজ্জাক এর আত্মীয় মফেল সরকার এর বাড়ি চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলামের বাড়ির সাথে হওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে আব্দুর রাজ্জাককে হত্যার উদ্দেশ্যে পূর্ব পরিকল্পনা করতে থাকে। কুলখানি শেষে আব্দুর রাজ্জাক ও তার সঙ্গী মেহেদীকে নিয়ে মোটরসাইকেল যোগে বাড়ি আসতে থাকে। জহুরুল ইসলামের বাড়ির সামনে আব্দুর রাজ্জাক ও তার সঙ্গী মেহেদী মোটরসাইকেল যোগে আসলে জহুরুল ইসলামের গুন্ডা বাহিনী মোটরসাইকেল গতিরোধ করে। মোটরসাইকেল গতিরোধ করার সাথে সাথে দেশীয় অস্ত্র দাড়ালো ছুরি নিয়ে জহুরুল ইসলাম দাড়ালো ছুরি দিয়ে মামলার বাদী আব্দুর রাজ্জাককে মাথায় কোপ মারে এবং জহুরুল ইসলাম এর শ্যালক বাবু চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কোপ দেওয়ার চেষ্টা করলে দ্রুত মোটরসাইকেল চালক মেহেদী ও আব্দুর রাজ্জাক ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
গুরুতর রক্তাক্ত অবস্থায় ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাক খান মোটরসাইকেল যোগে বেলকুচি থানায় অফিসার ইনচার্জ এর কাছে আসলে থানার পুলিশ চিকিৎসা করার জন্য পরামর্শ দেন। পুলিশের পরামর্শ অনুযায়ী বেলকুচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় বেলকুচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত ডাক্তার আব্দুর রাজ্জাককে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেচ্ছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করেন। তিনি বর্তমানে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেচ্ছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এঘটনায় বেলকুচি থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
এবিষয়ে বেলকুচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, রক্তাক্ত অবস্থায় ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাক আমার কাছে এসেছিল। চিকিৎসার জন্য প্রথমে তাকে বেলকুচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করার জন্য পরামর্শ দেয়। এঘটনায় তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।