বিপুল ইসলাম আকাশ,সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধিঃ

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে আসন্ন শারদীয় দূর্গাপুজার একটি অস্থায়ী পুজা মণ্ডপের নির্মাণাধীন সবকটি প্রতিমা ভাংচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

বৃহস্পতিবার ভোরে উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের চাচিয়া মীরগঞ্জ সাহাপাড়া গ্রামের অস্থায়ী পুজা মণ্ডপে এ ঘটনা ঘটেছে।

স্থানীয়রা জানায়, সাহাপাড়া মহল্লার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন গত ১০ বছর ধরে অস্থায়ীভাবে মণ্ডপ তৈরি করে দূর্গাপুজা করে আসছে। প্রতিবারের ন্যায় এবারেও তারা পুজা উদযাপন করতে প্রতিমা তৈরি করেছে। প্রতিমাগুলো দেখভালের জন্য নিয়মিত পাহারাও দেন তারা। বৃহস্পতিবার ভোর ৩ ঘটিকা পর্যন্ত একজন পাহারাদার সেখানে অবস্থান করে। সে বাসায় গিয়ে ঘুমায়। পরে স্থানীয়রা ভোর সারে ৪টার দিকে এসে প্রমিমা ভাংচুর অবস্থায় দেখতে পায়।

প্রতিমা তৈরির মালাকর সুভাস চন্দ্র বর্মন বলেন, আমি ২২/২৩ বছর থেকে প্রতিমা তৈরির কাজ করি। আমার জীবনে কখনো এমন ঘটেনি যে ওজনের কারণে প্রতিমাগুলো ভেঙে পড়বে। শত্রুতা করে কে বা কাহারা ঘটনাটি ঘটিয়েছে।

সাহাপাড়া সার্বজনিন পুজামণ্ডপের সাধারণ সম্পাদকের ছেলে মনোরঞ্জন সাহা বলেন, আমি রাত তিনটায় প্রতিমাগুলো ভালো অবস্থায় দেখেছি। ভোর ৪টার দিকে শব্দ শুনে ঘর থেকে বাহিরে বের হয়ে দেখি প্রতিমাগুলো মুখ থুবড়ে পড়ে মাটিতে পড়ে আছে।

পুজামণ্ডপের সভাপতি চন্দন কুমার সাহা বলেন, আমরা ১০বছর ধরে এখানে অস্থায়ী পুজামণ্ডপ তৈরি করে পুজা করে আসছি। কখনো এমন ঘটনা ঘটেনি। এঘটনায় আমরা খুবই মর্মাহত। আমাদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনেছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের শাস্তির দানি জানাচ্ছি।

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য যুব পরিষদের উপজেলা সভাপতি পিন্টু কুমার সরকার বলেন, এঘটনার দায় উপজেলা পুজা উদযাপন কমিটির সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক এড়াতে পারবেনা। তারা কখনো পুজামণ্ডপের দেখাশোনার জন্য মণ্ডপের দায়িত্বপ্রাপ্তদের সাথে যোগাযোগ করেনি।

উপজেলা পুজা উদযাপন কমিটির সভাপতি নিমাই ভট্টাচার্য বলেন, এটা খুব দুঃখজনক ঘটনা। আমরা মণ্ডপের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদকদের আগেই নির্দেশ দিয়েছি মণ্ডপ পাহারা দেয়ার জন্য।

ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বলেন, সাম্প্রতিক সম্প্রতি বিনষ্ট করার জন্য কে বা কাহারা এ কাজটা করেছে। এ ঘটনায় মামলায় প্রস্তুতি চলছে।

থানা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল আজিজ বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এবিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে। প্রকৃত দোষীদের গ্রেফতারে পুলিশ তৎপর রয়েছে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ-আল-মারুফ বলেন, বিষয়টি দেখে আমরা খুবই মর্মাহত। পুজা উদযাপনের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে মণ্ডপ কমিটির লোকজনের হাতে বিশ হাজার টাকা দিয়েছি, যাতে তারা নতুন প্রতিমা এনে পুজা উদযাপন করতে পারে।