মোঃ মুক্তাদির হোসেন, স্টাফ রিপোর্টারঃ
নরসিংদীর পলাশে ঘোড়াশাল পৌর এলাকার ৪ নং ওয়াডে মোঃ রাজন মিয়া (১৭) নামে এক কিশোরকে চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে এরশাদ ওরুফে (খুকু মিয়ার) সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে। এসময় তাদের পিটুনিতে গুরুত্বর আহত হয়েছে ইয়াছিন ১৮ নামে আরেক জন। ১৩ মে শনিবার রাতে পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল পৌর এলাকার দক্ষিণ পাইকসা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
নিহত রাজন চর-পালাশ গ্রামের ফায়েজ উদ্দিনের ছেলে ও গুরুত্বর আহত ইয়াছিন একই এলাকার।
অভিযুক্ত এরশাদ ওরফে (খুকু মিয়া) ও তাহার সহযোগীরা দক্ষিণ পাইকসা গ্রামের সোবাহান মিয়ার ছেলে সহ তাহার ভাড়াটিয়া।
স্থানীয়রা জানায়, গতকাল রাতে রাজন ও ইয়াছিন পাইকসা গ্রামে এরশাদ ওরফে খুকু মিয়ার বাড়ির পাশে সন্দেহজনক ঘুরাঘুরি করতে দেখে বাড়ির লোকজন তাদের আটক করে। পরে চোর সন্দেহে তারা রাজন ও ইয়াছিনকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে। মারধরের এক পর্যায়ে ঘটনাস্থলেই রাজনের মৃত্যু হলে তারা মরদেহটি বাড়ির পাশের পরিত্যক্ত আশরাফ টেক্সাটাইল মিলের একটি ঝোঁপে ফেলে রাখে।
এদিকে রাজনের বড় ভাই তাহার বাড়ি ফিরতে দেরি দেখে তাহার মোবাইলে ফোন দিলে রিসিভ হয়নি পরে, আজ রবিবার সকালে এক রিকসা চালাক রাজনের পরিবারকে মৃত্যুর খবর দেয়। নিহতের পরিবার পুলিশ কে খবর দিলে পুলিশ এসে ওই ঝোঁপ থেকে রাজনের মরদেহ উদ্ধার করে। পরে মরদেহ নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। অন্যদিকে আহত ইয়াছিনকে উদ্ধার করে পলাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এদিকে রাজনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে স্বজনরা অভিযুক্তদের বাড়ি ঘেরাও করলে অভিযুক্ত এরশাদ ওরফে খুকু মিয়া পালিয়ে যায়।
নিহতের স্বজনরা জানায়, অভিযুক্ত এরশাদ ওরফে খুকু মিয়া একজন মাদক ব্যবসায়ী। সে দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদক ব্যবসা করে আসছেন। মাদকের জেরে তাদের রাস্তা থেকে ধরে এনে মারধর করে। গতকাল শনিবার রাতেও ইয়াসিন ও রাজনকে রাস্তা থেকে ধরে এনে মারধর করে। এক পর্যায়ে রাজন মারা গেলে এরশাদের বাড়ির পাশে একটি ঝোঁপে ফেলে রাখে। আর যদি এরা কোন অপরাধ করে থাকে তার জন্য আইন আছে। তাদের পুলিশের কাছে দিবে, এমন নির্মম ভাবে পিটিয়ে মেরে ফেলবে কেনো। আমরা এই হত্যা’র ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।
এদিকে আজ সকালে অভিযুক্ত এরশাদ ওরফে খুকু বাড়িতে না থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ দিগে ঘটনাস্থ পরিদর্শন করেন
নরসিংদী সদর সার্কেল কে এম শহিদুল ইসলাম সোহাগ,পলাশ থানা ওসি তদন্ত মোঃ এমদাদুল হক, ঘোড়াশাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মোঃ ইলিয়াস সহ দপ্তরের কর্মচারী কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এসময় নরসিংদী সদর সার্কেল কে এম শহিদুল ইসলাম সোহাগ বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ঝোঁপ থেকে মরদেহ উদ্ধার করি। পরে তা ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে জানতে পেরেছি চোর সন্দেহে তাকে রাতে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এ বিষয়ে তদন্ত করে মূল রহস্য উদঘাটন করার চেষ্ঠা করছি। এব্যাপারে নিহত পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।