মোঃ ইসমাঈল হোসেন, বগুড়া প্রতিনিধিঃ

‎বগুড়ার আলোচিত শীর্ষ সন্ত্রাসী পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর অপরাধ জগতের গডফাদার আব্দুল মতিন সরকার (৫০) কে বগুড়া জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি চৌকোষ দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকার মোহাম্মদপুর বসিলা এলাকায় ২১শে জুন-২৫ (শনিবার) রাত ১১টার দিকে একটি ফ্ল্যাটবাড়িতে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে। অভিযানে নেতৃত্বদেন বগুড়া ডিবির
‎ওসি মোঃ ইকবাল বাহার। মতিন সরকার ঐ ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিয়ে দীর্ঘদিন আত্মগোপনে ছিলেন। গ্রেফতারের পর রাত ১২টার দিকে তাকে নিয়ে বগুড়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেয় ডিবি টিম।
‎আব্দুল মতিন সরকারের স্থায়ী ঠিকানা বগুড়া শহরের চকসূত্রাপুর চামড়া গুদাম এলাকায়।তিনি বগুড়ার মাদক জগতের আরেক সম্রাট, সন্ত্রাসী তুফান সরকারের বড় ভাই, তার পিতার নাম মৃত মজিবর রহমান। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তিনি দীর্ঘদিন ধরে বগুড়ায় সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ভূমিদখল, মাদক ও অস্ত্র ব্যবসাসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে সংঘটিত দুটি হত্যা মামলাসহ তার বিরুদ্ধে বর্তমানে প্রায় ১২টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এছাড়াও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর করা মামলায় দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকায় আদালত তাকে ১৩ বছরের সাজা ও ২কোটি ২৮ লাখ ৩১ হাজার টাকা জরিমানাসহ সম্পদ জব্দের রায় প্রদান করেছে।
‎বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাসান বাশির বলেন, মতিন সরকারের বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র ও মাদক ব্যবসাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। তাকে ধরতে আমাদের টিম দীর্ঘদিন ধরেই চেষ্টা করে আসছিল। অবশেষে সফলভাবে তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে।
‎স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মতিন সরকারের নেতৃত্বে একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে শহরের বিভিন্ন এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে আসছিল। তার প্রভাবের কারণে কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলতে সাহস পেত না। সম্প্রতি বগুড়ায় সংঘটিত কয়েকটি সহিংস ঘটনার পর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারীতে ছিলেন মতিন সরকার। তার গ্রেপ্তারের খবরে শহরে স্বস্তি ফিরে এসেছে।আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, মতিন সরকারের বিরুদ্ধে চলমান মামলাগুলোর পাশাপাশি নতুন করে তদন্ত শুরু করা হবে। তিনি অপরাধ চক্রে যত গভীরভাবে জড়িত থাকুন না কেন, প্রত্যেকটি অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
‎ বহুল আলোচিত এই শীর্ষ সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তারের ফলে বগুড়ার রাজনীতি ও অপরাধ জগতে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।সংশ্লিষ্ট মহল বলছে, রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় অপরাধ জগতের যে শক্ত ঘাঁটি গড়ে উঠেছিল, তা ভাঙার জন্য এ ধরণের অভিযান অব্যাহত রাখা প্রয়োজন।
‎উল্লেখ্য যে আজ ২২শে জুন (রবিবার) মতিন সরকারকে বগুড়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে ৭দিনের রিমান্ড আবেদন করলে বিজ্ঞ আদাল ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।