রাজবাড়ী প্রতিনিধিঃ
রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার সাওরাইল ইউনিয়নের লাড়িবাড়ী গ্রামে ঘুম থেকে ডেকে তুলে একজনকে হাতুড়ি ও বন্ধুকের বাট দিয়ে পেটানো হয়। এঘটনায় গুরুতর আহত অবস্থায় ওই ব্যক্তি ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে মারা গেছেন।
নিহত ব্যক্তির নাম মঙ্গল চন্দ্র বিশ্বাস। তিনি লাড়িবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা। হামলার ঘটনায় ভূক্তভোগির ছেলে কুমারেশ বিশ্বাস ১৯ ফেব্রুয়ারি দুপুরে কালুখালী থানায় লিখিত ভাবে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
নিহতের বড় ছেলে মনজিৎ কুমার বিশ্বাস বলেন, ১৮ ফেব্রুয়ারি প্রতিদিনের মতো আমরা রাতের খাওয়া-দাওয়া করে ঘুমিয়ে পড়ি। রাত তখন একটা থেকে সোয়া একটা। আমার বাবার ঘরের দরজায় টোকা দেওয়া হয়। বাইরে থেকে জানায়, কাকু উঠেন। আপনার সঙ্গে কথা আছে। আমরা রাজবাড়ী থেকে ডিবির লোক এসেছি। একটু কথা বলেই চলে যাবো।’ আমার বাবা দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে আমার বাবার জামার কলার ধরে উঠানে নিয়ে আসে। এরপর মাটিতে ফেলে পায়ের ওপর হাতুড়ি দিয়ে পেটানো হয় ও রাইফেলের বাট দিয়ে গুতানো হয়। হামলাকারীরা চার-পাঁচটি ফায়ার করে। এতে আমার বাবার পা ভেঙে গেছে। আমি দরজা খুলে আমার স্ত্রীকে ধাক্কা দিয়ে আবার বাবার গায়ের ওপর ফেলে দেয়। এসময় আমি লাঠি দিয়ে বারি দিয়ে বন্দুক ফেলে দিয়ে দৌড়ে চাচার বাড়ি গিয়ে চিৎকার করি। এসময় চিৎকার শুনে সবাই এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে আমার বাবাকে উদ্ধার করে কালুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বাবাকে স্থানান্তর করে। সেখানে তাকে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়। রোববার রাত ৮টার দিকে তিনি মারা যান।
তিনি বলেন, হামলাকারীরা ১০ থেকে ১২জন ছিল। তাদের সবার কাছে অস্ত্র ছিল। তাদের মুখোশ পড়া। তবে মারধর করার এক পর্যায়ে তিনজনের মুখোশ খুলে যায়। আমার ছোট ভাই কালুখালী থানায় মামলা দায়ের করেন।
কালুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসাইন বলেন, রোববার রাতে চিকিৎসাধীণ অবস্থায় আহত ব্যক্তি মারা গেছেন। মামলায় ছয়জন এজাহারভূক্ত আসামী ছিল। তাদের মধ্যে চারজন জেল হাজতে ও একজন জামিনে আছেন। মামলার এজাহারভূক্ত এক আসামী পলাতক আছে। তাকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।
হামলার ঘটনায় কালুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ইসরাত জাহান উম্মন জানিয়ে ছিলেন, ১৮ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত পৌনে চারটার দিকে মঙ্গল চন্দ্র বিশ্বাসকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়ে ছিল। সেখানে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়। আহতের পায়ে আঘাতের চিহ্ন ছিল।