আহসান হাবীব নাহিদ, গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি :

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর সরকারি কলেজের শতবছরের লক্ষাধিক টাকার গাছ অবৈধ ভাবে কাটায় থানায় লিখত অভিযোগ দায়ের করেছেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ জয়নুল আবেদীন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায় সাদুল্লাপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজের দক্ষিণ পশ্চিম পার্শ্বে অভিযুক্ত মোঃ মোজাম্মেল হক (৫০) ও মোছাঃ রুবিনা সুলতানা বেগম (৪৫) এর কলেজের সীমানা প্রাচীর সংলগ্ন জমি থাকায় বহুতল ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করেন। নির্মাণ কাজের শুরু থেকেই

সাদুল্লাপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজের সীমানা প্রাচীর সংলগ্ন একটি শতবছরের লক্ষাধিক টাকা মূল্যের মেহগনি গাছ কর্তনের পায়তারা করে আসেন। গাছটি সরকারি সম্পত্তি হওয়ায় এবং দেশের জীববৈচিত্র রক্ষায় ১জানুয়ারি ২০২৩ হতে ৩১ শে ডিসেম্বর ২০৩০ পর্যন্ত বিধি মোতাবেক কলেজের গাছ কর্তন করায় নিষেধাজ্ঞা থাকায় কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ জয়নুল আবেদীন গাছটি কর্তন করা সম্ভব নয় বলে অভিযুক্তদের অবগত করেন। কিন্তু তবুও নিষেধ করা সত্ত্বেও অভিযুক্তরা ৩রা জুন ২০২৪ তারিখে রাত্রি ১১টার দিকে মিস্ত্রি দ্বারা মেহগনি গাছটির মাঝ খানে কেটে ডাল পালা কলেজের ভিতরে রাখেন। ৪জুন সকালে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ জয়নুল আবেদীন কলেজে এসে গাছ কর্তন দেখে অভিযুক্ত মোঃ মোজাম্মেল হক ও মোছাঃ রুবিনা সুলতানা বেগমের নিকট কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করে সরকারি গাছ কর্তন করার নিষেধ করা সত্ত্বেও কেনো গাছ কাটা হয়েছে এবিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্তরা বিভিন্ন হুমকি ধামকি প্রদান করেন বলে উল্লেখ করেন।

এবিষয়ে অভিযুক্ত মোজাম্মেল হকের নিকট জানতে চাইলে তিনি জানান আমরা গাছ কাটিনি কলেজ কর্তৃপক্ষেই গাছ কর্তন করে আমাদের নামে মিথ্যা দোষারোপ করে থানায় মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেছেন। আমাদের ভবন নির্মাণ কাজ চলছে কলেজের গাছটি আমার ভবনে হেলে পড়ায় নির্মাণে সমস্যা হওয়ায় আমার স্ত্রী মোছাঃ রুবিনা সুলতানা বেগম কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ জয়নুল আবেদীন বরাবরে ১৮ডিসেম্বর ২০২৩ শে গাছটি বাড়ী নির্মাণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করায় কর্তনের জন্য লিখিত আবেদন জানালে আমার স্ত্রীর আবেদনের প্রেক্ষিতে ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩শে তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণের জন্য সাদুল্লাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ কাওছার হাবীব বরাবরে একটি লিখত আবেদন জানান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ জয়নুল আবেদীন। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার  সাদুল্লাপুর সামাজিক বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য জানালে ২০ ডিসেম্বর ২০২৩ শে গাছটির মূল্য নির্ধারণ করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট প্রতিবেদন দাখিল করলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ৫ ফেব্রুয়ারী ২০০৩ খ্রি: তারিখের শিম/শা-১১বিধি-৪/২০০৩/১১৯ নং পরিপত্রের আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ জয়নুল আবেদীন কে অবহিত করেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অবহিত করলেও তিন মাস অতিবাহিত হলেও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় ৪ মার্চ নির্দেশনাপত্র কার্যকরের জন্য আমার স্ত্রী মোছাঃ রুবিনা সুলতানা বেগম পূনরায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ কাওছার হাবীব বরাবরে  লিখিত আবেদন জানান। ও একই সঙ্গে সাদুল্লাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবরে তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য লিখত অভিযোগ দায়ের করেন। তবুও কোনো ব্যবস্থা না হওয়ায় আমার স্ত্রী মোছাঃ রুবিনা সুলতানা বেগম ৬ মে ২০২৪ তারিখে গাইবান্ধা জজ কোর্টের এ্যাডভোকেট মোঃ রফিকুল ইসলাম বুলু এর মাধ্যমে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ জয়নুল আবেদীনকে লিগেল নোটিশ পাঠিয়েছেন। এজন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ আমাকে ও আমার স্ত্রীকে চক্রান্ত মূলক মামলায় ফাঁসাতে নিজেরায় গাছ কর্তন করে আমাদের নামে থানায় মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানান মোঃ মোজাম্মেল হক।