নীলফামারী প্রতিনিধি;

নীলফামারীতে গত চার সপ্তাহ থেকে প্রচণ্ড তাপদাহে বিপাকে পড়েছেন কৃষক। বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টি না হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে আমন চাষীরা। উপায় না পেয়ে শ্যালো মেশিন, বৈদ্যুতিক মটর ব্যবহার করে সেচ দিয়ে আমন রোপন করছেন তারা। কিন্তু প্রচণ্ড তাপদাহের কারণে জমিতে আমন রোপনে কৃষি শ্রমিকদের অনিহার কারণে বিপাকে পরেছেন এ জেলার কৃষকেরা।
সদরের উপজেলার পলাশবাড়ী ইউনিয়নের কলোনীপাড়ার কৃষক মমিনুর রহমান বলেন, ‘আমি প্রতিবছর ১০ বিঘা জমিতে আমন রোপন করি। কিন্তু এবার বৃষ্টি নেই, প্রচন্ড গরম তাই বৈদ্যুতিক মটর দিয়ে সেচ দিয়ে আমন রোপন করতেছি। তবে প্রচণ্ড তাপদাহের কারণে কৃষি শ্রমিক সংকট, অতিরিক্ত টাকা দিয়ে আমন রোপন করতে হচ্ছে। একদিকে পানি নেই, আরেক দিকে গরমের জন্য কৃষি শ্রমিক সংকট, আমাদের এবার আমন চাষে লোকসান গুণতে হবে।’

লক্ষীচাপ ইউনিয়নের কৃষক রুবেল ইসলাম জানান, বৃষ্টি না হওয়ায় এবার আমন ধানের চারা এখনো রোপন করতে পারিনি। আমার জমিগুলো রোদে ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। আমি শ্যালো মেশিন দিয়ে সেচ দিয়ে ১ বিঘা জমিতে আমনের চারা রোপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। দেখি আল্লাহ কি করেন।

ইটাখোলা ইউনিয়নের কৃষক হামিদুল ইসলাম বলেন, ‘প্রচণ্ড তাপদাহে আমাদের বীজতলা পুড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। অন্য কৃষকের কাছে বীজতলা কিনেছি। এছাড়া আমরা সেচ দিয়ে আমন রোপন করলেও প্রচণ্ড গরমের ফলে জমিতে পানি থাকছে না। এতে সেচ দিয়ে আমন রোপনের ফলে আমাদের অতিরিক্ত অর্থ খরচ হচ্ছে। জানি না কি হবে এবার।’

জেলা কৃষি কৃষি বিভাগ জানায়, ‘জেলায় এবার আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লক্ষ ১৩ হাজার এক’শ হেক্টর জমি। অনাবৃষ্টির কারণে কৃষকেরা বিভিন্ন উপায়ে সেচ দিয়ে আমন রোপন করছেন। আর কৃষি শ্রমিক প্রচণ্ড তাপদাহের কারণে মাঠে যেতে ভয় পাচ্ছেন। তাপদাহের কারণে কৃষকদের বীজতলা পুড়ে গিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। আমন চাষের উপযোগী ক্ষেতগুলো ধূ ধূ বালুচর হয়ে পড়ে রয়েছে।’

এ বিষয়ে জেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘বর্ষা মৌসুম তবুও নীলফামারীতে বৃষ্টি নেই। আমরা কৃষকদের সেচ দিয়ে আমন রোপনের পরামর্শ দিচ্ছি। প্রচণ্ড তাপদাহের কারণে কৃষি শ্রমিকেরা মাঠে যেতে পারছে না।