মোঃ তারিকুল ইসলাম রাজিব, বিশেষ প্রতিনিধিঃ মুজিবনগর উপজেলাধীন মুজিবনগর স্টার ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসকের ভুল অস্ত্রোপাচারে নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ করেছে স্বজনরা।

শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। মৃত শিশুর স্বজন ও ক্লিনিক সূত্রে জানা গেছে, গত রাত সাড়ে ৯ টার দিকে চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা থানার বোয়ালমারী গ্রামের ফকির পাড়ার সামাদুলের স্ত্রীর প্রসব বেদনা উঠলে মুজিবনগর উপজেলায় অবস্থিত মুজিবনগর স্টার ক্লিনিকে নিয়ে আসে। রাত সাড়ে১১ টার দিকে ক্লিনিকের ডাক্তার রিচার্ড সরেন রোগীর সিজারিয়ান অপারেশন করেন।

এ সময় শিশুর অবস্থা খারাপ হওয়ায় শিশুটিকে বল্লভপুর মিশন হাসপাতালে রেফার্ড করেন। বল্লভপুর মিশন হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। এ ঘটনা নিয়ে গতকাল শনিবার সকালে মৃত শিশুর স্বজনরা ক্লিনিক অবরোধ করেন এবং ক্লিনিক মালিক ও চিকিৎসকের বিচার দাবি করেন। রোগীর সাথে থাকা মৃত শিশুর নানী বলেন, আমার মেয়ে ৭ মাসের গর্ভবতী ছিল গত শুক্রবার সাড়ে ৯ টার দিকে তার হালকা ব্যথা উঠলে আমরা ক্লিনিকে নিয়ে আসি। ভর্তিকরার পরে তাকে একটি স্যালাইন দেওয়া হয়। স্যালাইন দেওয়ার পরে তার আর কোনো ব্যথা ছিল না।

পরে রাত সাড়ে ১১ টার দিকে ক্লিনিকের ডাক্তার রিচার্ড সরেন রোগীর আল্ট্রাসনো করে স্বজনদের কোন কিছু না জানিয়ে রোগীর সিজার করেন। সিজার করার পরে বাচ্চা অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে বল্লভপুর হসপিটালে নিয়ে ইনকিউবেটরে রাখার জন্য বলেন, বল্লভপুর হসপিটালে নিয়ে যাওয়ার পরে সেখানকার ডাক্তার বাচ্চা মারা গেছে বলে জানান। তিনি আরো বলেন, ৭ দিন আগে আমার মেয়ের আল্ট্রাসনো করা হয়েছে, সেখানে বাচ্চার কোন সমস্যা ছিল না। ডাক্তার কেন আমাদের না বলে সাত মাস বয়সেই বাচ্চা সিজার করল। ঐ ডাক্তারের কারণে আমাদের বাচ্চা টি মারা গেছে। আমরা ডাক্তার এবং ক্লিনিক মালিকের বিচার চাই।

এ বিষয়ে ডাক্তার রিচার্ড সরেন বলেন, আল্ট্রাসনো করার পর দেখা যায় গর্ভবতী মা ও বাচ্চা অসুস্থ এবং পেটের ভিতর বাচ্চা উল্টো অবস্থায় আছে এবং কোন পানি নাই মা এবং বাচ্চা দুটো ঝুঁকির মধ্যে ছিল এজন্য ইমার্জেন্সি ভাবে রোগীর স্বজনদের সাথে আলাপ করে দ্রুত সিজার করা হয়। এ সময় বাচ্চা অসুস্থ হওয়ায় তাকে দ্রুত বল্লভপুর হসপিটালে ইনকিউবেটরে রাখার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু রোগীর স্বজনরা নিয়ে যেতে দেরী করার কারণে হয়তো বাচ্চা টি মারা গিয়েছে। তবে মা এর অবস্থা এখন ভালো অবস্থায় আছে।

এ বিষয়ে মুজিবনগর থানা ইনচার্জ (ওসি) মেহেদি রাসেল বলেন, বিষয়টি শুনেছি এবং সাথে সাথে একজন পুলিশ অফিসার সহ কয়েক জন পুলিশ সদস্য ওই ক্লিনিকে পাঠিয়েছিলম। তবে কোন লিখিত অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।