মেনহাজুল ইসলাম তারেক, দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি:
দিনাজপুরের পার্বতীপুর বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির ভূগর্ভ থেকে কয়লা উত্তোলণের কারণে ১২টি গ্রামের ঘরবাড়ি ফাটলে এলাকাবাসী ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় ক্ষতিপূরণের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি ক্ষতিগ্রস্থদের ‘দাবি আদায় বাস্তবায়ন কমিটি’। আজ ২৯ অক্টোবর মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১ টায় বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি ক্ষতিগ্রস্থদের দাবি আদায় বাস্তবায়ন কমিটির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা লিখিত বক্তব্য পাঠ করে শোনান। এতে তিনি বলেন, কয়লা খনির কারণে ঘরবাড়িতে ফাটল সৃষ্টি হলে আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত অভিযোগ করি, আমাদের ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাগুলো সার্ভারের মাধ্যমে পদক্ষেপ নিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও জানান, অজ্ঞাত কারণে খনি কর্তৃপক্ষ এখনও কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করছেনা। আমরা ছয় দফা চুক্তির কথা বলেছিলাম, সেই ছয় দফা চুক্তিও এখন পর্যন্ত বাস্তবায়ন হয়নি। এই ছয় দফা চুক্তির মধ্যে রয়েছে কর্তৃপক্ষের সমঝোতা চুক্তি মোতাবেক ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার হতে চাকরি দেওয়ার কথা, ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার ১২টি গ্রামের বাড়িঘর ফাটলে কাঁপুনি ও ঝুঁকিপূর্ণভাবে যারা পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করছে তাদের দ্রুত পুনর্বাসন করা, ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার ভূমিহীন প্রতিটি পরিবারকে মাইনিং সিটি অথবা উন্নত মানের বাসস্থান তৈরি করে দেওয়ার কথা, ক্ষতিগ্রস্থদের অবশিষ্ট ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়া, ক্ষতিগ্রস্থদের সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা এবং মসজিদ, মন্দির, স্কুল, কলেজ ও হাসপাতাল তৈরি করে দেওয়ার কথা। ক্ষতিগ্রস্থ যাদের জমি থেকে কয়লা উত্তোলণ করা হচ্ছে, তাদেরকে কয়লা উৎপাদনের বোনাস পার্সেন্টেজ দেওয়ার কথাও তাতে বলা হয়েছিলো। কিন্তু গত ৩০ বছরে কয়লাখনি কর্তৃপক্ষ বৈ-গ্রাম সহ অন্যন্যা গ্রামগুলোর যে অফুরন্ত ক্ষতি করেছে তার বাবদ তারা তেমন কিছুই পায়নি এবং খনি কর্তৃপক্ষ এই এলাকার মানুষকে বোকা বানিয়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলণে অভিযোগ করেন তিনি। তাই আজকের এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টার কাছে ন্যায্য দাবী তুলে ধরেন তিনি সাংবাদিকদের মাধ্যমে। এসময় উপস্থিত ছিলেন, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি ক্ষতিগ্রস্থদের দাবি আদায় বাস্তবায়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক আল বিরুনী, সহ-সভাপতি রবিউল ইসলাম মন্ডল, সিনিয়র সহ সভাপতি আলী হোসেন, আব্দুর রহমান বাচ্চু, গোলাম রব্বানী, মনিরুজ্জামান, সাইফুল ইসলাম, রেজাউল ইসলাম, আবেদ আলী, মফিজুল ইসলাম, মেনাজুল ইসলাম, মতিয়ার রহমান, আনিছুর রহমান, রোকোনুজ্জামান, মকছেদ আলী সহ সংগঠনের প্রায় শতাধিক সদস্য এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত অন্যান্য বক্তারা বলেন, যদি আমাদের দাবিসমূহ যথাশীঘ্রই বাস্তবায়ন করা না হয় তাহলে আগামী ০৬ নভেম্বর থেকে আমরা কয়লাখনি চত্ত্বর এলাকায় অবস্থান কর্মসূচী পালন করতে বাধ্য হবো।