ওবায়েদুর রহমান সাইদ,শরীয়তপুর প্রতিনিধিঃ

শরীয়তপুরে শিশু রাইয়ানের চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের কাছে নিয়ে আসার পথে হঠাৎ করে একটি গুইসাপ দ্রুত গতিতে রাস্তার উপর দিয়ে যাওয়ার পথে ভ্যানগাড়ির চাকার নিচে পরলে গাড়িটি উল্টে যায়। এসময় সাদিয়া ভ্যানের নিচে পড়লে ঘটনাস্থলেই মারা যান।
বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) বেলা ১১ টার সময় শরীয়তপুর সদর উপজেলার সুবচনী বাজারের নাগেরপারা সড়কে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত সাদিয়া গোসাইরহাট উপজেলার নাগেরপাড়া ইউনিয়নের বালিকুরি গ্রামের রায়হান শিকদারের স্ত্রী।
ভ্যানচালক ও সাদিয়ার পরিবার সূত্রে জানা যায়, শিশু রাইয়ানের চিকিৎসার জন্য তার মা সাদিয়া ও বাবা রায়হান ভ্যানগাড়ি যোগে সুবচনী বাজারে চিকিৎসকের নিকট যাচ্ছিলেন। যাওয়ার পথে সড়কের উপর দিয়ে একটি গুইসাপ দ্রুত গতিতে গেলে ভ্যানগাড়িটি উল্টে যায়। এসময় সাদিয়া ভ্যানগাড়ির নিচে পরে যান। গাড়িতে থাকা তার স্বামী রায়হান ও ভ্যানচালক আহত হলেও শিশু রাইয়ানের কোনো ক্ষতি হয়নি। পথচারীরা দ্রুত সাদিয়াকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ভ্যানচালক মন্নান বেপারী বলেন, নাগেরপাড়া থেকে ভ্যানগাড়ি চালিয়ে সুবচনী বাজারের দিকে আসছিলাম। হঠাৎ একটি গুইসাপ দ্রুত গতিতে রাস্তায় চলে এসে ভ্যানগাড়ির নিচে পরলে আমার গাড়িটি উল্টে যায়৷ উল্টে যাওয়া গাড়ির নিচে পরে গুরুতর আহত হোন সাদিয়া আপা। সাদিয়া আপাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেছেন।
নিহতের স্বামী রায়হান শিকদার বলেন, বিয়ের পর আমার মনে কষ্ট দিয়ে সাদিয়া কখনো কোনো কথা বলেনি। আমার বাচ্চাটির বয়স ছয় মাস। আমার বাচ্চার মা আর নেই। এখন আমি এই শিশু বাচ্চাকে নিয়ে বাঁচব কীভাবে? আমার কোনো অভিযোগ নেই, আমি মরদেহ ময়নাতদন্ত করতে দেব না। পুলিশ চাচ্ছে ময়নাতদন্ত করতে।
সাদিয়ার শাশুড়ি মাজেদা বেগম বলেন, রাইয়ান অসুস্থ থাকায় তাকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে আসার পথে গাড়ি উল্টে গিয়ে আমার ছেলের বউ মারা গেছেন। মেয়েটির মা বাবা কেউ নেই। নিজের মেয়ের মতো সাদিয়াকে আমি ভালোবাসতাম। সাদিয়া এক্সিডেন্ট করে মারা তেছে। আমাদের কোনো অভিযোগ নেই।

পালং মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় সাদিয়া মারা গেছেন। পরিবার না চাইলে তার ময়নাতদন্ত হবে না। কিন্তু তাদেরকে আইনি প্রকৃয়ার মধ্য দিয়ে মরদেহটি নিতে হবে। অল্প সময় আগে দুর্ঘটনাটি ঘটায় পরিবারের সবাই মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছেন। তাদেরকে সময় দিয়েছি, তারা ধীরে সুস্থে আইনী প্রকৃয়ার মধ্য দিয়ে মরদেহ নিবেন বলে আশা করছি।