রাজবাড়ী প্রতিনিধিঃ
রাজবাড়ীর পাংশায় টাকা দিয়েও ফরম ফিলাপ হয়নি এসএসসি পরিক্ষার্থী রিপন শেখ নামের এক শিক্ষার্থীর। ফলে পরিক্ষা দেওয়া হয়নি তার। টাকা পেয়েও ফরম ফিলাপের করা ভুলে গেছে প্রধান শিক্ষক। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
রাজবাড়ীর পাংশার উপজেলার মাছপাড়া ইউনিয়নের মেঘনা খামারপাড়া গ্রামের অলিল শেখের ছেলে রিপন শেখ। রিপন শেখ মাছপাড়া ইউনিয়নের মেঘনা হাই স্কুলেন দশম শ্রেণির মানবিক শাখার ছাত্র। ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরিক্ষায় অংশ গ্রহণের জন্য অত্র বিদ্যালয় থেকে প্রাক নির্বাচনী পরিক্ষা দিয়ে কৃতকার্য হয়। পরে এসএসসি পরিক্ষার ফরম ফিলাপের জন্য বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে ২ হাজার ৫০০ টাকা জমা দেয় রিপনের মা শিল্পী খাতুন ।
১০ ফেব্রুয়ারী শনিবার বিদ্যালয়ের আয়োজনে অনুষ্ঠিত শিক্ষার্থীদের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিক ভাবে ফুল দিয়ে রিপন শেখকে বিদায় জানায় শিক্ষকরা। পরে ১৪ ফেব্রুয়ারী অত্র বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী সকল শিক্ষার্থীকে এডমিট কার্ড প্রদান করা হয়। তবে এডমিট কার্ড মেলেনি রিপন শেখের।
শিক্ষার্থী রিপন শেখ জানান, পরিক্ষার ফরম ফিলাপের জন্য ২ হাজার ৫০০ টাকা দেওয়া হয়েছে। বিদায় অনুষ্ঠানের জন্য ৫০০ টাকা ও এডমিট কার্ড গ্রহণের জন্য ৩০০ টাকা দিয়েছে। আনুষ্ঠানিক ভাবে বিদ্যালয় থেকে বিদায়ও নিয়েছে। পরিক্ষার আগের দিন এডমিট কার্ড আনতে গেলে তাকে জানানো হয় তার এডমিট কার্ড হয়নি।
রিপনের মা শিল্পী খাতুন বলেন, আমার স্বামী একজন দিন মুজুর। আমি পরের বাড়িতে কাজ করে কোনমত খেয়ে না খেয়ে সংসার চালাই। আমি প্রতিবেশির কাছ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা ধার করে নিয়ে প্রধান শিক্ষক আব্দুল কুদ্দুস স্যারের কাছে দেই। তবুও আমার ছেলে পরিক্ষা দিতে পারলো না।
তিনি জানান, এ বিষয়ে অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল কুদ্দুসের বিচার দাবি করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আরিফুল ইসলাম পিন্টু বলেন, দুই মাস হলো আমি এই স্কুলে যোগদান করেছি। আমি যোগদানের আগেই ২০২৪ সালের এসএসসি পরিক্ষার্থীদের ফরম ফিলাপ হয়েছে। তৎকালীন প্রধান শিক্ষক বিষয়টি সম্পর্কে ভালো বলতে পারবেন।
মো. আব্দুল কুদ্দুস বলেন, আমি দুই মাস আগে অত্র বিদ্যালয় থেকে অবসর জনিত কারণে বিদায় নিয়েছি। আমি বিদায় নেওয়ার আগেই ২০২৪ সালের পরিক্ষার্থীদের ফরম ফিলাপ সম্পন্ন হয়েছে। ওই শিক্ষার্থীর মা আমার কাছে টাকা দিয়েছিল মনে হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ জাফর সাদিক চৌধুরী বলেন, এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি দ্রুততার সাথে সুষ্ঠ তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে বলা হয়েছে।