মেনহাজুল ইসলাম তারেক, দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি:

দিনাজপুরের পার্বতীপুর শহরের রেলওয়ে হাসপাতাল সংলগ্ন হরিজন পট্টির (মেথর) পারিবারিক রাধাকৃষ্ণ মন্দিরের কাসা পিতলের মূর্তি ও সোনা চুরির ঘটনায় পুলিশ সন্দেহভাজন দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, সুজন মিয়া (২৫) ও মমিনুল ইসলাম (২০)। জানা যায়, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩ টা থেকে ভোর ৬ টার মধ্যে প্রাচীর টপকিয়ে মন্দিরের ভিতর প্রবেশ করে চোরেরা এক ভরির উপরে সোনার চেইন, ৮ টি কাসা পিতলের মূর্তি সহ পূজা পার্বণে ব্যবহৃত কাসা সামগ্রী (থালাবাসন) চুরি করে নিয়ে যায়। চুরির সময় চোরেরা মন্দিরের তালা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে। এতে প্রায় দুই লক্ষ টাকার মত ক্ষতিসাধন হয়েছে ঐ মন্দিরটির। মন্দির প্রতিষ্ঠাতা রাজকুমার বাঁশফোড় জানায়, মামলা দায়ের ও সন্দেহভাজন দু’জনকে গ্রেফতারের পর এলাকা উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। আশপাশের লোকজন তাদের সম্প্রদায়ের একটি পক্ষের লোকজনের উসকানিতে গতকাল শনিবার বেলা ১১ টার দিকে তাদের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর এবং মন্দিরের উপর চড়াও হওয়ার প্রয়াস চালায়। একই সম্প্রদায়ের রুবেল বাঁশফোড় জানায়, মন্দির চুরি হলো আমাদের আর বাইরের আক্রমণে আমরা বাড়ি থেকে বের হতে পারছি না। অবশ্য এ ব্যাপারে রেলওয়ে থানাধীন ফাঁড়ির ইনচার্জ ও মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা সোয়েব আলী বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, এমনতো কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, এটি একটি স্পর্শকাতর মামলা প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে জোর তদন্ত চলছে। রাজকুমারের পারিবারিক সূত্রে দাবী করা হয়েছে, ২০০০ সালে তাদের পরিবারের দু’জন একসাথে হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ার পর থেকে
হরিজন সম্প্রদায়ের কিছু অসাধু ব্যক্তি মহল্লায় বিভাজন সৃষ্টি করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় মাঝে মধ্যেই হামলা-মামলা, চুরি সহ নানারকম অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে চলেছে। মন্দির চুরি মামলার বাদী লালতী বাঁশফোড় বলেন, আমরা নিরূপায় জীবন-যাপন করছি। এ ব্যাপারে রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ সাকিউল আজমের সাথে কথা হলে জানান, আইনি তৎপরতায় কোন কমতি নেই। ঘটনার পরপরই সন্দেহভাজন দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মালামাল উদ্ধারে ভাংড়ি পট্টিতে অভিযান চালানো হয়েছে। জোর তদন্ত চলছে, আশাকরছি প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে।