আহসান হাবীব নাহিদ, গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি :

গাইবান্ধায় অবৈধ বালু ব্যবসায়ী কর্তৃক তিন সাংবাদিকের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন,বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়েছে।

সোমবার (৩ জুন) দুপুরে শহরের আসাদুজ্জামান স্কুল এন্ড কলেজের সামনে (ডিবি রোডে) দুই ঘণ্টা ব্যাপি এই মানবন্ধন কর্মসূচি পালন করেন জেলার সাংবাদিকরা।

মানববন্ধন শেষে গণমাধ্যমকর্মীরা শহরের এক নং ট্রাফিক মোড়ে ঘন্টা ব্যাপী সড়ক অবরোধ করে রাখে। এ সময় তারা রাস্তায় শুয়েও অবস্থান নেন। এতে রাস্তার উভয় পাশে যানজটের সৃষ্টি হয়।

কর্মসূচিতে গাইবান্ধার ফুলছড়ি, সাদুল্লাপুর, পলাশবাড়ী,সাঘাটা প্রেসক্লাবের সাংবাদিক নেতাসহ জেলার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়ার গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি শফিউল ইসলামের সভাপতিত্বে, দৈনিক নবজীবন পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি মেহেদী বাবুর সঞ্চালনায় মানবন্ধনের শুরুতেই ঘটনা তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন মামলায় অভিযুক্ত দৈনিক জনতা ও আনন্দ টিভির জেলা প্রতিনিধি মিলন খন্দকার, দৈনিক বার্তা বাজারের জেলা প্রতিনিধি সুমন মিয়া ও দৈনিক নাগরিক ভাবনার জেলা প্রতিনিধি রিওন ইসলাম রকি।

পরে অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন, দৈনিক কালের কন্ঠের জেলা প্রতিনিধি অমিতাভ দাশ হিমুন, সাপ্তাহিক প্রতিপক্ষের নির্বাহী সম্পাদক রেজাউননবী রাজু, এটিএন বাংলার জেলা প্রতিনিধি ইদ্রিসউজ্জামান মনা, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার সরকার মোঃ শহীদুজ্জামান, এশিয়ান টিভির স্টাফ রিপোর্টার খালেদ হোসেন, স্থানীয় সাপ্তাহিক চলমান জবাবের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক রজতকান্তি বর্মন, দৈনিক ঢাকা টাইমসের জেলা প্রতিনিধি জাভেদ হোসেন, সময়ের আলোর কায়সার রহমান রোমেল, ঢাকা পোস্ট এর জেলা প্রতিনিধি রিপন আকন্দ, ডিবিসি নিউজের রিকতু প্রসাদ, বাংলাভিশনের ফিরোজ কবির মিলন, নাগরিক টিভি আনোয়ার আল শামীম, মানবজমিনের রওশন হাবীব জুম্মন,প্রতিদিনের সংবাদের মুকুল মাসুদ,এশিয়ান টিভি’র জেলা প্রতিনিধি সুমন মন্ডল,এক টাকার খবরের রবিউল ইসলাম, দৈনিক বাংলাদেশ সমাচারের রবিন সেন, দৈনিক ভোরের সময়ের লালচান বিশ্বাস সুমন প্রমূখ।

এ সময় বক্তারা অবিলম্বে অবৈধ বালু ব্যবসায়ী কর্তৃক সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হয়রানি মূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান। একইসাথে পুলিশকে নিরপেক্ষ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলেরও আহবান করেন।

উল্লেখ্য, দীর্ঘ দুই বছর ধরে গাইবান্ধার কামারজানীতে নদী থেকে বালু উত্তোলন করে আসছিল ঐ এলাকার বালু ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর, রানা, সাইফুল, মিল্টন সহ একটি অবৈধ বালু ব্যবসায়ী সংঘবদ্ধ চক্র।

এই ঘটনায় গত ১৭ ফ্রেব্রুয়ারি আনন্দ টিভি সহ বিভিন্ন স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি কামারজানী ইউনিয়ন ভুমি সহকারী কর্মকর্তা খন্দকার আজিজুর বাদি হয়ে বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে গাইবান্ধা সদর থানায় মামলা করেন। এদিকে মামলা হওয়ার পরেও তারা তাদের বালু উত্তোলন ও ব্যবসা চালিয়ে গেলে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাহমুদ আল হাসান একাধিক বার অভিযান চালিয়ে বালু পরিবহন কাজে ব্যবহৃত অন্তত ২০ টি গাড়ী জব্দ করেন ও প্রায় ২০ লক্ষ টাকা জরিমানা আদায় করেন। এতে বালু ব্যবসায়ীরা ক্ষিপ্ত হলে তাদের মধ্য জাহাঙ্গীর আলম চলতি বছরের ২৮ মার্চ গাইবান্ধা সদর থানায় মিথ্যা চাঁদাবাজির একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এর প্রায় এক মাস পরে ২৪ এপ্রিল বুধবার সদর থানায় মামলাটি রেকর্ড ভুক্ত করা হয়।