শরীয়তপুর প্রতিনিধি:

শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জে ৩০ বস্তা সরকারি সার জব্দ করা হয়েছে। সারের বস্তাগুলোতে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) সিল দেওয়া ছিল। সোমবার (২৪ জুন) রাতে ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজিবুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এরআগে দুপুরে উপজেলার চরকুমারিয়া ইউনিয়নের মোল্লার হাট থেকে সারগুলো জব্দ করার পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নির্দেশে পাট কর্মকর্তার জিম্মায় দেওয়া হয়।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সোমবার দুপুরে একটি নছিমনে ৩০ বস্তা সরকারি সার মোল্লারহাট বাজারের ব্যবসায়ী মোশারফ ফকিরের দোকানে আনা হয়। পরে স্থানীয়রা বিষয়টি নিয়ে জিজ্ঞাসা করলে নছিমন বোঝাই সার রেখে পালিয়ে যায় চালক। এর কিছুক্ষণ পর চরকুমারিয়ার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য দানু মিয়া হাওলাদার সারগুলো ইউনিয়ন পরিষদের জন্য আনা হয়েছে বলে গাড়িটি সরিয়ে নিয়ে যেতে চাইলে বাঁধা দেন স্থানীয়রা। এতে দু-পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের শুরু হয়। পরে খবর পেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজিবুল ইসলাম ও উপ-সহকারী পাট কর্মকর্তা মিজানুর রহমান। এসময় সারের বস্তাগুলো জব্দ করে পাট কর্মকর্তার জিম্মায় তুলে দেন রাজিবুল ইসলাম। এছাড়া ঘটনার তদন্তে দুই সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী সদস্য আয়েশা বলেন, মেম্বার দানু হাওলাদার ইউনিয়ন থেকে সরকারি সারগুলো বিক্রির জন্য নছিমনে করে মোশারফ ফকিরের দোকানে পাঠাচ্ছিলেন। স্থানীয় লোকজন বিষয়টি দেখতে পেয়ে বাধা দেয়।

চরকুমারিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ফাইজুল মোল্লা বলেন, সরকার এ সারগুলো কৃষকের কাছে বিনামূল্যে পৌঁছে দেওয়ার জন্য পাঠিয়েছে। কিন্তু সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হুমায়ুন মোল্লা আর ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার দানু হাওলাদার মিলে সেই সার জনগণকে না দিয়ে বিক্রি করছিলেন। এর ঘটনার সুষ্ঠু বিচার হওয়া দরকার।

এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য দানু মিয়া হাওলাদার বলেন, এই সারগুলো ইউনিয়ন পরিষদের জন্য আনা হয়েছিলো। কিন্তু গোডাউনে ঢোকার আগেই আমার প্রতিপক্ষের লোকজন গাড়িটি আটকিয়ে দেয়। মূলত আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে তারা একাজ করেছে।

এ ব্যাপারে ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিবুল ইসলাম বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসি। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও পাঠ কর্মকর্তাকে সদস্য করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত ফলাফল পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।