মো. নাহিদুল ইসলাম ফাহিম, রাজবাড়ী :

রাজবাড়ী সদর উপজেলার চন্দনী ইউনিয়নে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজীর বিরুদ্ধে ডাকা প্রতিবাদ সভায় হামলার অভিযোগ উঠেছে । বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে চন্দনী বাস স্ট্যান্ড বাজার এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। চন্দনী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও চন্দনী ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য মালেক শিকদারের নেতৃত্বে এই হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন হামলায় আহত নেতাকর্মীরা। এই ঘটনায় কমপক্ষে ৫০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে বিএনপির দুইগ্রুপ পাল্টা-পাল্টি কর্মসূচির ঘোষণা করে। দুই পক্ষেরই কয়েক’শ নেতাকর্মীরা সেখানে উপস্থিত হন। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে দুইপক্ষের লোকজনই আহত হয়েছেন। এঘটনাকে কেন্দ্র করে চন্দনী বাজার এলাকায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে।

সদর উপজেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক রফিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘৫ আগস্ট সরকার পতনের পটরপরই  চন্দনী ইউনিয়নে বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজী ও হামলার ঘটনা ঘঠেছে। অনেক বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। এই হামলা ও  চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে চন্দনী বিএনপির উদ্যোগে একটি মিছিল বের করা হয়। মিছিল শেষ করে রাস্তা থেকে যখন চন্দনী বাজারে নেতাকর্মীরা নামে । তখনই দুই পাশ থেকে মালেক শিকদারের নেতৃত্বে শতশত মানুষ রামদা, চাপাতি, ছ্যান ও লাঠিসোটা নিয়ে  অতর্কিত হামলা চালানো হয়। এতে আমিসহ আমাদের কমপক্ষে অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে পাঁচজন রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। অনেকেই প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে চলে এসেছে। এছাড়া হামলা চালিয়ে আমাদের কয়েক’শ চেয়ার,  ২৫ থেকে ৩০ টি মোটরসাইকেল ও দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়েছে। আমরা এই হামলার বিচার দাবি করছি।’

রাজবাড়ী জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য রাজবাড়ী সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি ও চন্দনী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মালেক শিকদার বলেন, ‘আমি গত ১০ দিন ধরে রাজবাড়ীর বাইরে আছি। আমি ফোনের মাধ্যমে শুনেছি যে চন্দনীতে একটি ঘটনা ঘটেছে। সেখানে আমাদের যুব দলের নেতারা একটি কর্মীসভা ডেকেছিল। এজন্য তারা দিনব্যাপী মাইক দিয়ে প্রচারও করেছে। কিন্তু আসলামের অনুসারী কিছু লোক একই স্থানে পাল্টা কর্মসূূচি দেয়। এতে আমাদের নেতাকর্মীদের সাথে তাদের সংঘর্ষ হয়। আমাদের কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। তারা রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে সেখানেও তাদের উপর হামলা করার হুমকি দেওয়া হয়েছে। সেখানে চিকিৎসা নিতে না পেরে তারা ফরিদপুরে গেছেন চিকিৎসা নেওয়ার জন্য।’

রাজবাড়ী জেলা বিএনপির আহবায়ক অ্যাড. লিয়াকত আলী বাবু বলেন, ‘চন্দনী ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে একটি আঞ্চলিক সভার আয়োজন করা হয়েছিল। এখানে একদল সন্ত্রাসী এসে এদের উপর হামলা চালিয়েছে। আমি এই হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। যারা হামলা করেছে, তারা কাগজে কলমে বিএনপির কোন নেতা না। বিএনপিতে তাদের কোন পরিচয় নেই। তাদের কাজই সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করা। আমরা এই হামলার ঘটনায় আইনানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’

রাজবাড়ী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইফতেখারুল আলম প্রধান জানান, চন্দনীর ঘটনায় এখন পরিবেশ স্বাভাবিক রয়েছে। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ কোন অভিযোগ করেনি।