রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার কলিমোহর ইউনিয়নের হাটবনগ্রামে শ্বশুরবাড়িতে গোপাল বিশ্বাস নামে একজনকে গুলি করা হয়। শনিবার ভোরে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। হত্যাকান্ডে ব্যবহার পিস্তল পরে খড়ের গাদায় লুকিয়ে রাখা হয়। পিস্তলসহ আরেকটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করেছে পুলিশ।
গতকাল বুধবার দুপুরে পাংশা থানায় প্রেসবিফ্রিংয়ে এসব তথ্য জানায় পুলিশ। এসময় সহকারী পুলিশ সুপার (পাংশা সার্কেল) সুমন কুমার সাহা, পাংশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলো বাধন বিশ্বাস (১৯), আশিক শিকদার (২২)। বাধন সরিষা ইউনিয়নের নাওড়া বনগ্রামের তুষার বিশ্বাসের ছেলে। আশিকের বাবার নাম মন্টু শিকদার। তাঁর বাড়িও একই গ্রামে। এছাড়া হত্যা মামলার পলাতক আসামী তপু সরকারের স্ত্রী উর্মি শিকদারকে (২০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
নিহত ব্যক্তির নাম গোপাল বিশ্বাস। কলিমোহর ইউনিয়নের হোসেনডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা। গোপাল পেশায় কৃষক ছিলেন। গুলি করে হত্যার ঘটনায় নিহতের বড় ভাই পরিমল বিশ্বাস বাদী হয়ে পাংশা থানায় মামলা দায়ের করে। শনিবার রাত সাড়ে ৮টায় মামলা দায়ের করা হয়। রাতেই অভিযান চালিয়ে শ্যালক বিজন সরকার ও নিহতের স্ত্রী চায়না সরকারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, ৫ মে রাতে গোপালকে গুলি করা হয়। শনিবার ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। হত্যাকান্ডে ঘটনায় নিহতের শ্যালক বিজন সরকার ও আলামত নষ্ট করার অভিযোগে স্ত্রী চায়ণা সরকারকে গ্রেপ্তার করা হয়। হত্যামামলা তদন্তে বাধন ও আশিকের জড়িত থাকার প্রমান পাওয়া যায়। তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রটি লুকিয়ে রাখায় তথ্য পাওয়া যায়। পরে অভিযান চালিয়ে বিলজোনা গ্রামের কৃষ্ণচন্দ্র সিংহের বাড়ির সামনের একটি খড়ের গাদায় লুকিয়ে রাখা হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত পিস্তল, একটি ম্যাগজিন, একটি গুলি ও গুলির একটি খোসা উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা আরও জানায়, তদন্তে প্রাপ্ত পলাতক আসামী তপু সরকারের স্ত্রীর কাছে একটি ওয়ান শুটার গান লুকিয়ে রাখা আছে। অভিযান চালিয়ে উর্মি শিকদারের বাড়ির একটি ¯বোরিংয়ের ভেতরে পলেথিন দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে।
এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন পাংশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান। শনিবার ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গোপাল মারা যায়। শনিবার রাতে নিহতের বড় ভাই পরিমল বাদী হয়ে মামলা দায়ের করে। রাত ১২টার পরে অভিযান চালিয়ে শ্যালক ও নিহতের স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়। রোববার দুপুরে তাদের রাজবাড়ী আদালতে পাঠানো হয়। বিকেলে শ্যালক বিজনের জবানবন্দী আদালত গ্রহণ করেন। তিনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। এছাড়া ওয়ান শুটারগান উদ্ধারের ঘটনায় উর্মি শিকদারের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে পাংশা থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালতে পাঠানোর পর বিচারক তাদের জামিনের আবেদন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।