সাব্বির হোসাইন, স্টাফ রিপোর্টার, কুমিল্লাঃ

বিভিন্ন দুর্ঘটনার মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনা একটা নিত্যনৈমিতিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি দেশে ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে সড়ক দুর্ঘটনা। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বাংলাদেশে প্রতিদিন গড়ে চারজন লােক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায় এবং পঙ্গুত্ব বরণ করে বিশ থেকে ত্রিশ জন লােক। সড়ক দুর্ঘটনা অত্যন্ত হৃদয়বিদারক ও মর্মান্তিক। সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে বিভিন্ন বয়স ও পেশার মানুষ। সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিদিন আমাদের বুক থেকে কেড়ে নিচ্ছে সবচেয়ে প্রিয় মানুষটিকে। আত্মীয়-স্বজন, মেধাবী লােক, প্রিয় ব্যক্তিত্ব অনেকেই হারিয়ে যাচ্ছেন সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে।
এ সড়ক দুর্ঘটনার মূল কারণ হচ্ছে সচেতনতার অভাব। আর এ থেকে সৃষ্ট অন্যান্য কারণগুলাে হচ্ছে- অসতর্কতা, ড্রাইভারদের বেপরােয়া গাড়ি চালানাে, যান্ত্রিক ত্রুটিপূর্ণ গাড়ি রাস্তায় নামানাে, ধারণ-ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী বােঝাই, ত্রুটিপূর্ণ অপ্রশস্ত রাস্তাঘাট, লাইসেন্সের কারচুপি, অদক্ষ চালক দ্বারা গাড়ি চালানাে, গাড়ি চালানাের সময় কথা বলা ও ফোন ব্যবহার করা, নেশা গ্রহণ করে নেশাগ্রস্ত হয়ে গাড়ি চালানাে, একটি গাড়ি থেকে অন্য গাড়ির গতি ও প্রয়ােজনীয় দূরত্ব বজায় না রাখা, ট্রাফিক আইন না মানা ইত্যাদি। অন্যদিকে সড়ক দুর্ঘটনা রােধে প্রয়ােজনীয় আইন ও শান্তির বিধান না থাকায় দুর্ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্টদের উদাসীনতা সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। একটি সড়ক দুর্ঘটনা একটি পরিবারের সারাজীবনের কান্না। বাংলাদেশে এরই মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনার বিরুদ্ধে ব্যাপক জনমত ও আন্দোলন গড়ে উঠেছে। সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরােধে ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলনে এগিয়ে যাচ্ছে এদেশের চলচ্চিত্র শিল্পী থেকে শুরু করে এদেশের প্রতিটি সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন। তারা বিভিন্ন সময় সরকারকে নানা সুপারিশ করে আসছে।
সড়ক দুর্ঘটনাকে নিয়ে কিছু পথচারীর সাথে কথা হলে তারা বলেন, দুর্ঘটনা এড়াতে আমাদের সর্বপ্রথম দৃশ্যমানতা বৃদ্ধি, ট্রাফিক সিগন্যাল মেনে চলা, ক্রসওয়াকে ক্রসিং করা এবং নিজে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকা। এই বিষয়ে কুমিল্লা জেলা ট্রাফিক পুলিশ থুইচা বলেন, গণপরিবহনের বেপরোয়া গতি, ওভারটেকিংয়ের প্রবণতা, পাল্লা দিয়ে গাড়ি চালানো, আইন ভেঙে ইউটার্ন করা, নির্দেশনা না মেনে যানবাহন পরিচালনা, ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার না করাসহ নানা কারণে সড়ক, মহাসড়কে দুর্ঘটনা ঘটে চলেছে। তিনি আরও বলেন, সড়কে দুর্ঘটনা কমাতে হলে পরিবহন মালিক- শ্রমিকদের যেমন সচেতন হতে হবে, সেইসঙ্গে জনসাধারণকেও সচেতন হতে হবে। চালকদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে এবং মানসিক চাপ নিয়ে যেন গাড়ি চালাতে না হয়, সেজন্য মালিক এবং মালিকদের সংগঠনগুলোকে আরও বেশি কার্যকর ভূমিকা পালন করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।