ওয়াসিম শেখ, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার রতনকান্দি ইউনিয়নের হরিনারায়নপুর গ্রামে ইছামতি নদীতে খনন কাজ শুরু হওয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ড ও খননকাজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বাংলা ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেবার অভিযোগ উঠেছে ব্রক্ষগাছা ইউনিয়নের সুবর্নগাতী গ্রামের সবুজ এর বিরুদ্ধে। সবুজ ব্রক্ষগাছা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মিন্টু খানের ছেলে।

স্থানীয়রা জানান, যমুনার শাখা নদীর পানির প্রবাহ বৃদ্ধিকরণে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধিনে ইছামতি নদীতে খনন কাজ চলছে। সিরাজগঞ্জ সদরসহ বিভিন্ন উপজেলায় অবস্থিত ইছামতী নদীতে পানির প্রবাহ সচল রাখতে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। ইছামতি নদী খননের সাথে সাথে সবুজ গ‌্যাং বাহিনী বাংলা ড্রেজার দিয়ে দিন রাত জোড়পুর্বক বালু উত্তোলন করে খনন কাজের ব্যহত ঘটাচ্ছে।
বাংলা ড্রেজার দিয়ে গভীর ভাবে খনন করায় ইছামতি নদী দু-পাশে ভেঙে পড়ার সম্ভবনা রয়েছে বলে হরিনারায়নপুর গ্রামবাসীর অভিযোগ।
প্রতি রাতে বিরতিহীনভাবে বাংলা ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করা হয় । দিনে ড্রেজার চালিয়ে ঘাপটি মেরে বসে থাকেন। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারী ও সাংবাদিকের আনাগোনা টের পেলে মেশিন বন্ধ করে পাশের গ্রামে গাঢাকা দেয়।
স্থানীয়রা আরো বলেন- বাংলা ড্রেজারে একদিকে গভীর খননে সামান্য বৃষ্টি হলে দু-পাড় ভেঙে পড়বে। এতে কৃষি ক্ষেত নদীতে চলে যাবে এবং সরকারের উদ্দেশ্য ভেহেস্তে যাবে অপরদিকে কৃষকের অপুরনীয় ক্ষতিসাধিত হবে বলে সাধারন মানুষ হতাশায় ভুগছেন। বালু উত্তোলনে মানা করলে স্থানীয় কৃষক, পানি উন্নয় বোর্ড ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কোন প্রকার বাধা নিষেধ না মেনে নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে জোড় পুর্বক বালু উত্তোলন করে দেদাচ্ছে বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেবার অভিযোগ উঠেছে।
রেইনবো কনস্ট্রাকশন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নাইড গার্ড সানোয়ার হোসেন বলেন- নদী খনন কাজে দেখাশোনার কাজে নিয়োজিত মিদুল খানকে মুঠো ফোনে হুমকি ধামকি দিয়ে বলে নদীর ভিতর টাকা নিয়ে আসতে হবে। টাকা না নিয়ে আসলে তোকে যেখানে পাবো সেখানে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।
স্থানীয় লোকজন কিছু বললে তাদের হত্যার হুমকি দেয়া হয়। মাদকাসক্ত সবুজ এর সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের ভয়ে এলাকার কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না।

এ বিষয়ে ঠিকাদার সোহাগ বলেন- বাংলা ড্রেজার দিয়ে যারা বালু উত্তোলন করছেন তারা দেশের ও জনগণের শত্রু। ইছামতি নদী খনন করে দু-পাশে সুন্দর করে স্লোব বার্ম তৈরী করা হয়েছে। বালু উত্তোলনের কারনে দৃশ্যমান খনন কাজটি ক্ষতিসাধিত হবে। বালু খেকোদের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড বরাবর অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু কোন কাজ হচ্ছে না ফলে খনন কাজটি নিয়ে হতাশায় রয়েছি।
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী মাসুদ রানা জানান, বাংলা ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে তাদের নামের তালিকা চেয়েছি ঠিকাদারের নিকট। ঠিকাদার তালিকা দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিষয়টি সরজমিনে তদন্তপুর্বক সবুজের বাংলা ড্রেজার দিয়ে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধের দাবী জানিয়েছেন স্থানীয়রা।