স্টাফ রিপোর্টার: এস আর টুটুল এম এলঃ

রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার ঘাসিগ্রাম ইউনিয়ন জাতীয় শ্রমিক লীগ ও কৃষক লীগের আয়োজনে শ্যামপুর হাট মাঠে ৭৫’এর ১৫ই আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তাঁর পরিবারের সকল শহীদ সদস্যদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া মাহাফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ ২৮- আগস্ট (সোমবার) বিকাল ০৪-০০ মিনিটে ঘাসিগ্রাম ইউনিয়ন জাতীয় শ্রমিক লীগ ও কৃষক লীগের আয়োজনে, শ্যামপুর হাট মাঠে ঘাসিগ্রাম ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি, আলমগীর হোসেন (ডালিম) ও শ্রমিক লীগের সভাপতি, আব্দুর রাজ্জাক এর সভাপতিত্বে ও ঘাসিগ্রাম ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক, মুরাদ আলী ও কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক সেলিম রেজার সঞ্চালনায়, হাজার বছর এর শ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সকল শহীদ সদস্যদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় অনুষ্ঠিত দোয়া ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন: রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, আসাদুজ্জামান আসাদ।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন: রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের ভাইস চেয়ারম্যান ও তথ্য গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক মেহবুব হাসান (রাসেল), রাজশাহী জেলা আওয়ামী যুবলীগের সহ-সভাপতি, আলমগীর হোসেন (রঞ্জু) তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমানে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনিবার্হী কমিটির অন্যতম সদস্য, গোলাম রাব্বানী,
মোহনপুর উপজেলা জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি, মজিবর রহমান, মোহনপুর উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি, জমসেদ আলী, জাহাঙ্গীর আলম মিলন, সাধারণ সম্পাদক, মোহনপুর উপজেলা শ্রমিক লীগ, শামিম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক, মোহনপুর উপজেলা কৃষক লীগ।

পার্শবর্তি উপজেলা তানোর থেকে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন: তানোর-মুন্ডুমালা পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও পৌর মেয়ের, সাইদুর রহমান, তালন্দ ইউনিয়ন বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, আসাদুল মোল্লা।

জাতীয় শোক দিবস ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান বক্তা, হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, প্রভাষক রাকিবুল হাসান সরকার (পাপুল সরকার)।

রাকিবুল হাসান সরকার (পাপুল) তাঁর বজ্রকন্ঠি বক্তব্যে বলেন:—
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট মানবতার শত্রু, প্রতিক্রিয়াশীল ঘাতকচক্রের হাতে বাঙালি জাতির মুক্তি আন্দোলনের মহানায়ক, বিশ্বের লাঞ্ছিত-বঞ্চিত-নিপীড়িত মানুষের মহান নেতা, বাংলা ও বাঙালির হাজার বছরের আরাধ্য পুরুষ, বাঙালির নিরন্তন প্রেরণার চিরন্তন উৎস, স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হন।

১৯৭৫ সালের ১৪ আগস্ট শেষ রাতে (১৫ আগস্ট) ঘাতকরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তার ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাসায় নৃশংসভাবে হত্যা করে। তাকে সপরিবারে নিঃশেষ করার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, জ্যেষ্ঠ পুত্র মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, দ্বিতীয় পুত্র মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল, কনিষ্ঠ পুত্র শিশু শেখ রাসেল, সদ্য বিবাহিত পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, বঙ্গবন্ধুর একমাত্র ভাই শেখ আবু নাসেরকে সেখানে হত্যা করা হয়। বেইলি রোডে সরকারি বাসায় হত্যা করা হয় বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত, তার ছোট মেয়ে বেবি সেরনিয়াবাত, কনিষ্ঠ পুত্র আরিফ সেরনিয়াবাত, দৌহিত্র সুকান্ত আবদুল্লাহ বাবু, ভাইয়ের ছেলে শহীদ সেরনিয়াবাত, আবদুল নঈম খান রিন্টুকে। আরেক বাসায় হত্যা করা হয় তার ভাগ্নে যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মণি ও তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বেগম আরজু মণিকে।

বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে আক্রমণ হয়েছে শুনে সেখানে যাওয়ার জন্য রওনা দেন বঙ্গবন্ধুর প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা কর্নেল জামিল উদ্দিন আহমেদ। তবে ৩২ নম্বরের সামনে পথভ্রষ্ট সেনা কর্মকর্তারা তাকে প্রথমে বাধা দেয় ও পরে হত্যা করে। এছাড়া ওইদিন ৩২ নম্বরের বাড়িতে কর্তব্যরত অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীকেও হত্যা করা হয়। এ হত্যাকাণ্ড বিশ্বের বুকে নিন্দিত ও ঘৃণিত রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের উদাহরণ হয়ে আছে।

সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে নেমে আসে তীব্র শোকের ছায়া এবং ছড়িয়ে পড়ে ঘৃণার বিষবাষ্প। শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়ে বাঙালি জাতি।

সেদিন ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর বড় সন্তান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি ও ছোট বোন শেখ রেহানা শেখ হাসিনার স্বামী প্রখ্যাত পরমাণু বিজ্ঞানী প্রয়াত ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়ার কর্মস্থল জার্মানিতে থাকায় বেঁচে যান।

’৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নরপিচাশ রূপি খুনিরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করতে ঘৃণ্য ইনডেমনিটি আইন জারি করে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে দীর্ঘ ২১ বছর বাঙালি জাতি বিচারহীনতার কলঙ্কের বোঝা বহন করতে বাধ্য হয়। ১৯৯৬ সালে জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠিত হলে এ বিচারের উদ্যোগ নেয়া হয়। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে নিয়মতান্ত্রিক বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ২০১০ সালে ঘাতকদের কয়েকজনের ফাঁসির রায় কার্যকর করার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করেন শেখ হাসিনা।