ওয়াসিম শেখ, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি :

পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার আগেই দুইটি পদে দুইজন পদপ্রার্থীর নিকট থেকে ২৪ লাখ টাকা উৎকোচ গ্রহণ করায় এলাকাবাসীর তোপে মুখে নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করতে বাধ্য হলেন ডিজি প্রতিনিধি ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার পূর্ব মুহূর্তে ডিজির প্রতিনিধি নিকট উৎকোচ গ্রহণের অভিযোগ এনে দুইটি পদে ৪জন পদপ্রার্থী লিখিত অভিযোগ দাখিল করায় নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত নয়, সম্পূর্ণ বাতিল করে চলে যান ডিজির প্রতিনিধি ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। ঘটনাটি ঘটেছে সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলার ধাপ ওয়াশীন উচ্চ বিদ্যালয়ে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায, পূর্ব নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী (৭ অক্টোবর ২০২৩ইং) তারিখে সকাল ১০টায় তাড়াশের ধাপ ওয়াশীন উচ্চ বিদ্যালয়ের ২টি পদে- পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা কর্মী ও আয়া পদে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার তারিখ নির্ধারিত হয়। যথাসময়ে নিয়োগ কমিটির সভাপতি, সদস্য সচিব, ডিজির প্রতিনিধি, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সহ নিয়োগ কমিটির সদস্যরা উপস্থিত হন। কিন্তু নিয়োগ পরীক্ষার পরীক্ষার্থী আয়া পদে ১জন ও পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে ১জন প্রার্থী উপস্থিত হন। বাকী ৪জন প্রার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করে ডিজির প্রতিনিধি ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর দুইজন প্রার্থীর নিকট থেকে ২৪ টাকা উৎকোচ গ্রহণ করেছে মর্মে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করে চলে যায়।
প্রার্থীর লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মাধাইনগর ইউনিয়নের উত্তর মধুরাপুর ধাপ গ্রামের জামাল উদ্দিন পুত্র সুমন এর নিকট থেকে ১২ লাখ ও ওয়াশিন গ্রামের তৈয়ব আলীর স্ত্রী মৌসুমি’র নিকট ১২ লাখ টাকা উৎকোচ গ্রহণ করেন প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও মাধাইনগর ইউপি চেয়ারম্যান হাবিলুর রহমান হাবিল ও প্রধান শিক্ষক নুর মোহাম্মদ। এলাকাবাসী বিষয়টি জেনে পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ থেকে বিরত রেখে ডিজির প্রতিনিধি ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে পরীক্ষা বাতিল করার সুপারিশ করেন। তাৎক্ষণিকভাবে ডিজির প্রতিনিধি ও উপজেলা শিক্ষা শিক্ষা কর্মকর্তা পরীক্ষা স্থগিত না করে সম্পূর্ণরুপে পরীক্ষা বাতিল করে চলে যান।

ধাপ ওয়াশিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুর মোহাম্মদ বলেন, এলাকাবাসীর তোপের মুখে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। তবে তিনি নিয়োগ বাণিজ্যের কথা অস্বীকার করেন।
ধাপ ওয়াশিন উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি ও মাধাইনগর ইউপি চেয়ারম্যান হাবিলুর রহমান হাবিল বলেন, প্রতিষ্ঠানে কোন নিয়োগ বাণিজ্য হয়নি। পরীক্ষা পুনরায় তারিখ অনুযায়ী নেওয়া হবে।
ডিজির প্রতিনিধি কাজিপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: আব্দুর রাজ্জাক বলেন, পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার আগেই নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়ায় নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত নয়, বাতিল করেছি। পুনরায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আবার নিয়োগ পরীক্ষা ভবিষ্যতে অনুষ্ঠিত হবে।
তাড়াশ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক এর নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগে এই নিয়োগ পরীক্ষাটি বাতিল করা হয়েছে। নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করেই আমরা স্কুল ত্যাগ করেছি।