মোঃ ফিরোজ হোসাইন, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধিঃ

নওগাঁর আত্রাইয়ে শীতের আগমনে ব্যস্ততা বেড়েছে কাপড় ব্যবসায়ীদের

সকালে ঘন কুয়াশা। শীতের প্রকোপতা বাড়ছে। ঋতু শরৎকে বিদায় দিয়ে হেমন্তকে বরণ করেছে প্রকৃতি। সকালের শুরুতেই দেখা মিলছে সবুজ প্রকৃতির মাঝে হেমন্তের ঘন কুয়াশা । এই কুয়াশায় জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। সারা দিন রোদের রাজত্ব শেষে সন্ধ্যা নামতেই বদলে যাচ্ছে তাপমাত্রা। ভোরের দিকে চাদর বিছিয়ে দিচ্ছে কুয়াশা। তবে কিছুটা জেঁকে বসেছে শীত। শীতকে মোকাবিলা করতে নওগাঁ জেলা শহরসহ উপজেলার ফুটপাত ও বড় বড় বস্ত্রবিতানগুলোতে গরম কাপড়ের পসরা নিয়ে বসেছেন দোকানিরা।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বিশেষ করে উপজেলা সদর,নাহার গার্ডেন, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স, ভবানীপুর বাজার, বান্ধাইখাড়া বাজার, নওদুলি বাজারসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ফুটপাত গুলোতে শীতবস্ত্রের যেন মেলা বসেছে। এসব বিপণিবিতানগুলোতে শীতের পোশাক কিনতে জড়ো হচ্ছেন ক্রেতারা। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন বেচা-কেনা এখনো জমে ওঠেনি।

প্রতিনিয়তই তরুণ-তরুণীদের ফ্যাশন পরিবর্তন হচ্ছে। তাই তাদের যদি নতুন কোনো রূপে দেখা যায়, তাহলে অবাক হওয়ার কিছুই নেই। ফ্যাশন হাউসগুলো সব সময়ই দেশি উপকরণ নিয়ে কাজ করে। সালোয়ার-কামিজ পরা মেয়েদের জন্য আছে লং জ্যাকেট, পঞ্চ। ফুলহাতা উজ্জ্বল রঙের লম্বা পাঞ্জাবিও আছে যা চুড়িদার পায়জামার সঙ্গে পরে তার ওপর একটা শাল জড়িয়ে নিলে ফ্যাশনও হবে, পাবে আরামও। এখন তরুণীরা পছন্দ করছেন মোটা কাপড়ের টপস, লেগিংস আর বাহারি ডিজাইনের কার্ডিগেন। শাড়ির ক্ষেত্রে ফুলস্লিভ ব্লাউজ আর শাড়ির সঙ্গে মিলিয়ে শাল জড়িয়ে হয়ে উঠতে পারেন অনন্য। টি-শার্ট বা শার্ট পরলে ওপরে পরতে পারেন হাতাকাটা সোয়েটার। অথবা একটু ঢিলেঢালা পুলওভার।

ছেলেদের জন্য শীত উপলক্ষে জ্যাকেটের পাশাপাশি ফুলহাতা টি-শার্ট, ফুলহাতা শার্ট, খদ্দর কাপড়ের আরামদায়ক ট্রাউজারও আছে। শীতে আঁটসাঁটো নয়, বরং ঢিলেঢালা পোশাকই পরতে আগ্রহী কিশোরী আর তরুণীরা। পশমী বা উলের ক্রুসকাটার কাজ করা সোয়েটার পরছেন অনেকেই। সোজা কাটের পোশাকের সঙ্গে বেছে নিতে পারেন হাঁটু পর্যন্ত লম্বা ব্লেজার। জ্যাকেট আর ব্লেজারের সংমিশ্রণে তৈরি নতুন ধরনের শীতের পোশাক উঠে আসছে তরুণদের পছন্দের তালিকায়। অফিসের প্রয়োজনে ব্লেজার পরতে পারেন।

উপজেলার ভবানীপুর ও বান্দাইখাড়া বাজারে ফুটপাতে কাপড়ের পসরা নিয়ে বসেছিলে ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতা আমজাদ হোসেন তিনি বলেন, ‘এই এলাকায় অনেকে শপিং করতে আসেন। তারা আমাদের কাছ থেকেও কাপড় কিনে নিয়ে যান। ছোট-বড়, সব বয়সী মেয়েদের সোয়েটার, মোটা কাপড়ের সর্টস, লং কুর্তি আছে। দাম ২০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে। গত দুই-তিন দিনে বিক্রি একটু বেড়েছে।

উপজেলা সদর এলাকায় কথা হয় শিক্ষার্থী আস্তাক হোসেনের সাথে। তিনি শীতের কাপড় এখনই কেনার কারণ জানিয়ে বলেন, ‘এলাকায় পুরোপুরি শীত এলে শীতের পোশাকের দাম বেড়ে যাবে। তাই এখনই কিনে নিচ্ছি।

ফ্যাশন সচেতনদের এই শীত কিন্তু ভীষণ প্রিয়। কেননা শীত নিবারণের হাজারো পোশাকে বাজার সরগরম। শীতের ফ্যাশন কেমন হতে পারে, তা ডিজাইনারদের মতে অনেকটা এমন যে, শীতের পোশাকের জম্পেশ কালেকশন নিয়ে এসেছে দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলোও। জ্যাকেট, ব্লেজার, সোয়েটার, হুডিতে যেমন রয়েছে ফ্যাশন বৈচিত্র্য তেমনি রয়েছে বাহারি রঙ।

উপজেলার ভবানীপুর বাজারের জননী বস্ত্র বিতান এন্ড ফ্যাসন হাউজের ব্যবসায়ী নাছির উদ্দিন চঞ্চল বলেন, ‘করোনার কারণে দীর্ঘদিন মার্কেট প্রায় ক্রেতাশূন্য ছিল। গত দুই-তিন দিন ধরে কম্বল, জ্যাকেট, সোয়েটার ও শাল কিনতে ক্রেতারা আসছেন। বেচা-কেনাও ভালো হচ্ছে।