মেনহাজুল ইসলাম তারেক, দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি-ঃ

দিনাজপুরের পার্বতীপুরে ডিস ব্যবসার তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্যকর পিপুল হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে এবং সেই হত্যাকান্ডটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে। গতকাল রোববার দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডিস ব্যবসায়ী মাহফুজ আলম পিপুল(৩৮) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। এর আগে পার্বতীপুর রেলওয়ে থানায় একটি হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করা হয়। জানা যায়, পিপুল হাসপাতালে মারা যাওয়ার পরপরই তড়িঘড়ি করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পিপুলের শ্বশুরপক্ষের স্বজনদের হাতে লাশ স্বাভাবিকভাবে হস্তান্তর করে। পিপুলের বড়ভাই তয়েজউদ্দিন (৬০) জানায়, আমি ডিউটি থেকে ফিরে এসে দেখি, ছোট ভাইয়ের লাশ বাড়িতে দাফনের ব্যবস্থা চলছে কোনোরকম সুরতহাল রিপোর্ট বা ময়নাতদন্ত ছাড়াই। অন্যান্য ভাইদের সাথে পরামর্শ করে হাসপাতাল এবং জিআরপি থানায় খোঁজ-খবর নিয়ে জানতে পারি, মামলার কোনোরকম ডকেট সংযুক্তি ছাড়াই হাসপাতালে চিকিৎসা করা হয়েছে। একপর্যায়ে আমরা জিআরপি রেলওয়ে থানার উপর চাপ সৃষ্টি করলে তারা আমাদের বাড়িতে নিয়ে আসা লাশ পার্বতীপুর থেকে ময়নাতদন্তের জন্য পুনরায় দিনাজপুর নিয়ে যায়। অনুসন্ধানে জানা যায়, শেষ পর্যন্ত পিপলের লাশের সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত করেছে পুলিশ। মামলার বাদী নিহতের বড়ভাই তয়েজ উদ্দিন জানান, ১৪ ফেব্রুয়ারী দিবাগত রাতে আমার ভাই পিপুলকে তুলে নিয়ে শহরের প্রাণকেন্দ্র বদ্ধভূমিতে নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিট ও নির্যাতন চালিয়ে অজ্ঞান করে হাত-পা বেঁধে বদ্ধভূমি সন্নিকটস্থ বাগানে কাঁটার উপরে ফেলে চলে যায় দুর্বৃত্তরা। আমরা খোঁজা-খুজির পর পরদিন সকালে তাকে উদ্ধার করে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তী করি। আমার আহত ভাইয়ের জ্ঞান ফিরলে তার বর্ণনা মোতাবেক সেলিম (৪০), পলাশ (৪৫), রমজান (৩০), হিরু (৩২) ও লালু (৩৫) কে আসামি করে পার্বতীপুর রেলওয়ে থানায় একটি হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করি। সে মামলায় আসামিরা দ্রুত জামিন হয়ে আসে। ইতোমধ্যে আমার ভাই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। বিষয়টি নিয়ে মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই কাজল হকের সাথে কথা হলে ঘটনাপ্রবাহের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আমি প্রচন্ড অসুস্থ অবস্থায় ছুটিতে রয়েছি এবং ডাক্তারখানায় এসেছি, থানায় ফিরলে কথা হবে। এ সংবাদ পাঠানো পর্যন্ত দিনাজপুর মর্গ থেকে লাশ পার্বতীপুরে পৌঁছেছে এবং দাফন করা হয়েছে। আসামিরা সবাই পলাতক রয়েছে।