মোঃ ইসমাঈল হোসেন, বগুড়ার সদর প্রতিনিধিঃ

বগুড়ার শিবগঞ্জে চলতি মৌসুমী রেকর্ড পরিমাণ জমিতে আলু চাষাবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় এ বছর আলুতে লেইট ব্লাইড নামক পচন রোগ দেখা দেওয়াই গাছ রক্ষায় কৃষকদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। তবে কৃষি অফিসের পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগিতায় ভালো মানের কীটনাশক প্রয়োগে তা প্রতিরোধের সক্ষম হয়েছে, ফলে এবারেও বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায় প্রত্যন্ত অঞ্চলের মাঠগুলোতে আলু চাষ হয়েছে চোখে পরার মত, মাঠ গুলো সবুজ রঙের গাছে পরিপূর্ণ।বিশেষ করে উপজেলার কিচক,আটমুল, পীরব, মাঝিহট্র, বুড়িগঞ্জ ইউনিয়নে ব্যাপক আলু চাষ হয়েছে। এ ব্যাপারে কিচক ইউনিয়নের বলরামপুর গ্রামের কৃষক বিশিষ্ট আলু ব্যবসায়ী মোঃ মোতাহার হোসেনের সঙ্গে কথা হলে তিনি আমাদের জানান-আমরা প্রতি বিঘায় পাকড়ী আলু ৬০ থেকে ৭০ মন, স্টিক আলু ৮০ থেকে ৯০ মন উৎপাদন করে থাকি।তিনি আরো জানান -এক বিঘা জমি চাষাবাদ করতে খরচ হয় ২০ হাজার টাকার মত, আর জমিতেই আলো বিক্রি হচ্ছে ৫৫থেকে ৬০ হাজার টাকা বিঘা, যা খরচ বাদে লাভ থাকবে বিঘা প্রতি ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকার মত। কৃষক আকবর আলী জানান- তিনি এবার এক একর জমিতে চালু চাষ করেছেন আশা করছেন দুই থেকে আড়াই,শ মন আলু পাবেন। আর একজন কৃষক ও বিশিষ্ট মৎস ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম জানান-তিনি তার ৫০ শতক জমিতে স্টিক আলু চাষ করেছেন, আশা করছেন ১৩০ থেকে ১৪০ মন আলো পাবেন।আলু ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম জানান – আমাদের এই উপজেলায় প্রায় ১০ থেকে ১২ টির মত আলু সংরক্ষণের জন্য হিমাগার রয়েছে, এগুলোতে সময়মত আলু রেখে আমরা সুবিধাজনক ভাবে বিক্রি করতে পারি।এ ব্যাপারে সাদুরিয়া (বলরামপুর) শাহ সুলতান হিমাগারের ম্যানেজার আনোয়ার হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন-আমাদের হিমাগারের ধারণক্ষমতা ৩ লাখ বস্তা আমরা বুকিং থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত কৃষক ও ব্যবসায়ীদের সার্বিকভাবে সহযোগিতা করে আসছি।ব্যবসায়ী ফারুক হোসেন বলেন-দেশীও চাহিদা মিটানোর পরেও বিশ্বের অন্যান্য দেশ যেমন-মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, দুবাই, সৌদি আরবসহ অন্যান্য দেশে আলু রপ্তানি করায় আমরা ব্যবসায়ীরা লাভবান হচ্ছি। আলু উৎপাদন সংক্রান্ত বিষয়ে শিবগঞ্জ উপজেলার কৃষিকর্মকর্তা কৃষিবিদ আল- মুজাহিদ সরকারের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন-এ বছর আমার উপজেলায় ১৮০০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে এবং আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ৪লক্ষ ৪১ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন আশা করছি কিছু কম বেশি হতে পারে।আমার উপজেলায় যেসব জাতের আলু চাষ হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলো-আলু (দেশী)-হাগরাই, লাল পাকড়ী, সাদা পাকড়ী, পাহাড়ী পাকড়ী, তেল পাকড়ী, ফাটাপাকড়ী।আলু (উফশী)-সানসাইন, এসটরিকস্ (স্টিক), গ্রানুলা, কার্ডিনাল, অ্যালভেরি, রোমানা, বারিআলু-৭২ বারিআলু-৮১তিনি আরো বলেন -উপজেলা কৃষিবিভাগের পক্ষ থেকে অনেক কৃষককে আমরা বিনামূল্যে সার ও বীজ প্রদান করেছি।