মোঃ আল-আমীন হোসেন, টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধিঃ
একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলের জিম্মির খবর শুনে কেঁদে বুক ভাসাচ্ছেন তার প্যারাইলাইজড বাবা হারুন অর রশিদ। পাশেই বিলাপ করে কাঁদছেন মা সালেহা বেগম। একমাত্র বোন মিতু আক্তার বুকে পাথর বেঁধে ভাইয়ের জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়ে বেড়াচ্ছেন।
তাদের আহাজারি দেখে প্রতিবেশী-আত্বীয়স্বজনরা ছুটে এসেছেন। যে যার মতো করে সান্ত্বনা দিয়ে যাচ্ছেন। পরিবারের একমাত্র ছেলের এমন দশায় সান্ত্বনা কি আর তাদের আশ্বস্ত করতে পারে? তাদের মুখে শুধু একটাই দাবি, সরকার যেন দ্রুত সাব্বিরসহ সব জিম্মিকে মুক্ত করে আনে।
জানা গেছে, ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি পণ্যবাহী জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর ২৩ জন নাবিকের একজন টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার সহবতপুর ইউনিয়নের ডাঙ্গা ধলাপাড়া গ্রামের সাব্বির হোসেন।
সাব্বির উপজেলার সহবতপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৪ সালে এসএসসি পাস করেন। এরপর টাঙ্গাইলের সরকারি এম এম আলী কলেজ (কাগমারি) থেকে ২০১৬ সালে এইচএসসি পাস করে ভর্তি হন চট্টগ্রাম মেরিন একাডেমিতে। সেখান থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে পাস করে ২০২২ সালের জুন মাসে এমভি আব্দুল্লাহ নামক পণ্যবাহী জাহাজে মার্চেন্ট কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন।
সাব্বিরের চাচাতো ভাই আহম্মেদ হোসেন রানা জানান, সাব্বিররা এক ভাই এক বোন। বোনের বিয়ে হয়েছে। সাব্বির অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া করেছে। তার বাবা মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে প্যারাইলাইজড হয়ে শয্যাশায়ী। সাব্বিরের চাকরি হওয়ার পর তার মা শয্যাশায়ী স্বামীকে নিয়ে সহবপুর তার বাবার বাড়িতে থাকেন। সংসার চলে সাব্বিরের উপার্জনে। সরকারের কাছে দাবি জানাই সাব্বিরসহ সবাইকে যেন জিম্মি দশা থেকে দ্রুত মুক্ত করা হয়।
সাব্বিরের বোন মিতু আক্তার বলেন, এক মাস আগে বাড়ি এসেছিল আমার ভাই। একদিন থেকেই চলে গেছে। মঙ্গলবার (১২ মার্চ) সকাল থেকে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। মঙ্গলবার দুপুরে এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজটি জলদস্যুদের কবলে পড়ার খবর পেয়ে আমরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি। বাবা মা খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। তারা শুধু কেঁদেই চলছে আর বলছে আমার ছেলেকে এনে দাও। আমার একমাত্র ভাইয়ের কিছু হলে বাবা মাকে বাঁচানো যাবে না। অতি দ্রুত আমার ভাইকে মুক্ত করে আনার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।