মোঃ ওবায়েদুর রহমান সাইদ, শরীয়তপুর প্রতিনিধিঃ

ঈদকে সামনে রেখে ঢাকা-শরীয়তপুরসহ জেলার অধিকাংশ সড়কে যাত্রীদের কাছ থেকে দিগুণ ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। অধিকাংশ সিটিং ও লোকাল বাসে যাত্রীদের অতিরিক্ত ভাড়া দিতেও বাধ্য করছে বাস শ্রমিকরা। যদিও অতিরিক্ত ভাড়া দিতে অস্বীকৃতি জানালে যাত্রীদের লাঞ্ছিত করারও অভিযোগ রয়েছে বাস শ্রমিকদের বিরুদ্ধে। তবে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে যাত্রীদের থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নিলেও নেওয়া হয়নি কোন ব্যবস্থা।অতিরিক্ত ভাড়ার বিষয়ে বাস চালক ও বাস মালিক সমিতির নেতারা অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের কথা অস্বীকার করেছেন। তবে একমুখো যাত্রী থাকার কারণে তারা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন বলে যুক্তি দিচ্ছেন। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে কোন তৎপরতা দেখা যায়নি।
মঙ্গলবার (০৯ এপ্রিল) সকাল শরীয়তপুর বাস স্ট্যান্ড ও প্রেমতলা মোরে সরেজমিন দেখা যায়, গত দুই দিন আগে থেকে ঢাকা-শরীয়তপুরগামী ঘরমুখো যাত্রীদের ভিড় বেড়েছে। যাত্রীদের কাছ থেকে সিটিং ও লোকাল বাসসহ ঢাকা-শরীয়তপুর রুটের বাসগুলো দিগুন ভাড়া আদায় করছে। পাশাপাশি সড়ক পরিবহন আইন লঙ্ঘন করে বাসে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই ও গাদাগাদি করে পরিবহন করছেন। বাস চালকরা আইনের কোনো নিয়মনীতি তোয়াক্কা করছেন না বলে অভিযোগ করছেন একাধিক যাত্রীর কাছ থেকে।যাত্রীদের অভিযোগ, শরীয়তপুর পরিবহন ও শরীয়তপুর সুপার ২৫০ টাকার স্থানে দাড়িয়ে ৫০০ ও সিটে বসিয়ে ৬০০ টাকা নিচ্ছে । শরীয়তপুর-ঢাকা সুপার সার্ভিসে ভাড়া ছিল ২৫০ টাকা বর্তমানে টিকিটে ২৯৪ টাকা লেখা থাকলেও ঢাকা থেকে শরীয়তপুর ভাড়া নেওয়া হচ্ছে দাড়িয়ে ৪০০টাকা, সিটে বসিয়ে ৫০০ টাকা। এছাড়াও বিআরটিসি, ঢাকা গোসাইরহাট সড়কে ৪০০ টাকা নির্ধারিত ভাড়া থাকলেও বর্তমানে ৪৫০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। শরীয়তপুর ফেম পরিবহনে ২৫০ টাকা করে নিয়মিত নিলেও ঈদপ উপলক্ষে ৫০০ টাকা করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।এতে করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে পরিবহনের কারণে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে পরিবহন সংশ্লিষ্টরা। আর অতিরিক্ত যাত্রী বহনে ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে এবং হয়রানির শিকার হচ্ছে বেশিরভাগ ঘরমুখো যাত্রীরা।যাত্রীদের লাঞ্ছিত করার কথা অস্বীকার করে গাড়ির চালক ও শ্রমিকদের দাবি, শরীয়তপুর থেকে ঢাকা ঈদের আগে যাওয়ার পথে বাসগুলো যাত্রী শূন্য অবস্থায় যেতে হয। যাত্রী নিয়ে শরীয়তপুরে আসে। আবার ঈদের পর ঢাকা থেকে শরীয়তপুর আসার যাত্রী পাওয়া যায় না। এ কারণে ঈদের দুদিন আগে ও ঈদের পরে কিছু অতিরিক্ত ভাড়া নেয়া হয়।শরীয়তপুর আন্তঃ জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি ফারুক আহমেদ তালুকদার মুঠোফোনে বলেন, ঈদের সময় শুধু শরীয়তপুরে না সব জেলাতেই অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে। তার পরও যারা অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে তাদেরকে আমরা চলাচলের সিরিয়াল দিচ্ছি না বলে ফোন কেটে দেন।সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাইনউদ্দিন বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত অতিরিক্ত ভাড়ার জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে জরিমানা করছি। এরপরও কোন যাত্রী থেকে যদি অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হয় তাহলে যাত্রীরা মালিক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে জানালে তারা ব্যবস্থা নিবে। তাদেরকে আমরা কঠোরভাবে হুঁশিয়ারি করে দিয়েছি।