শরীয়তপুর প্রতিনিধি:

বতর্মান পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেছেন শরীয়তপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নিজাম উদ্দীন আহাম্মেদ।
বুধবার (৭ আগস্ট ২০২৪) বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভার শুরুতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সেই সঙ্গে তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।

সভায় শরীয়তপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব একেএম নাসির উদ্দীন কালু বলেন, স্বৈরশাসকের পতন হয়েছে। এত অন্যায় অত্যাচার খুন গুম করেছে এত লুটপাট করেছে পাপের ভার আল্লাহ সহ্য করতে পারে নাই। তাই এত ঘৃণ্যভাবে পতন হয়েছে। আমরা যারা শরীয়তপুরে রাজনীতি করি সকলেই দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ জনকল্যাণে একনিষ্ঠ। এ পরিস্থিতিতে জেলা প্রশাসক আমাদের যে উদ্দেশ্য ডেকেছেন আমাদের করণীয় কি সেটা আমরা উপলব্ধি করতে পারছি।

তিনি আরও বলেন, দেশের মুক্তিকামী মানুষের বিজয়ে প্রথমত প্রশাসন তাদের চিন্তা চেতনার পরিবর্তন আনবে এটা আমি অনুভব করি। গত ১৬ বছর প্রশাসনে অনেক স্বাধীনচেতা ভালো কর্মকর্তা থাকার পরেও স্বৈরশাসকের কারণে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেন নাই। আজকে নতুনভাবে দেশ স্বাধীন হয়েছে। আপনাদের মন মস্তিষ্ক চিন্তা পরিবর্তন আনবেন এটা আমরা প্রত্যাশা করি।

সভায় শরীয়তপুর জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও সদর উপজেলা বিএনপি সভাপতি আলহাজ্ব সিরাজুল হক মোল্লা বলেন, যারা হামলা ভাঙচুর লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করছে তারা বিএনপির লোক নয়। বিএনপি গণতান্ত্রিক দল, বিএনপি গণতন্ত্রের চর্চা করে। আমরা এত কষ্ট ও শ্রমের বিনিময় যে স্বাধীনতা অর্জন করেছি, সেই অর্জন নষ্ট করার রাজনীতি বিএনপি করে না।

শরীয়তপুর জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি শাহ মো. আব্দুস সালাম বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সারা দেশের বিএনপির নেতাকর্মীদের স্পষ্টভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন, যে কোন নৈরাজ্যমূলক কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে। বন্ধ করার জন্য যা যা করতে হবে, সেই ব্যবস্থা আমাদের নিতে বলেছেন।
তিনি আরও বলেন, আজ থেকে যেন স্বাভাবিক জীবন যাপন পরিচালিত হতে পারে, তার জন্য আমাদের সবাইকে কাজ করতে হবে। আমরা প্রশাসনকে সহযোগিতা করবো। যারা বিভিন্ন অনিয়ম করে আমাদের প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়, আমাদের ছাত্র জনতার অর্জনকে নষ্ট করতে চায়; তাদের প্রতি সতর্ক থাকতে হবে।

এ সময় শরীয়তপুর জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন বিদ্যুৎ বলেন, আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে সরকারি সম্পত্তি আমাদের সবার। সুতরাং সরকারি কোনো সম্পত্তিতে আঘাত করা যাবে না।

শরীয়তপুর পুলিশ সুপার মো. মাহবুবুল আলম বলেন, দ্রুতই পুলিশের কার্যক্রমের মাধ্যমে সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে। এজন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।

সভাপতির বক্তব্যে শরীয়তপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নিজাম উদ্দীন আহাম্মেদ বলেন, এখানে সব রাজনৈতিক দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা রয়েছেন। আমরা একটি সুন্দর শরীয়তপুর চাই। সুশাসন যেখানে থাকবে, ন্যায়বিচার থাকবে, চাঁদাবাজি হবে না, মাস্তানি হবে না, মানুষ স্বাধীনভাবে চলতে পারবে। সেরকম একটি শরীয়তপুর চাইলে সবাইকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে হবে। সুন্দর শরীয়তপুরের জন্য কাজ করতে হবে। এজন্য আমি সবাইকে ডেকেছি।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, জেলা জামায়েতের সাবেক আমীর মাওলানা খলিলুর রহমান, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি এ্যাড. জাহাঙ্গীর আলম কাশেম, মোফাজ্জেল হোসেন ফকির, আব্দুল মান্নান মাদবর, বি.এম হারুন অর রশীদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দুলাল খান, এ্যাড. মনিরুজ্জামান খান দিপু, বি.এম মহিউদ্দিন বাদল, মাহাবুব মোর্শেদ টিপু, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুব আলম তালুকদার সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ।