রাজবাড়ী প্রতিনিধিঃ

বাংলাদেশ রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী-তে বিদ্যমান বৈষম্য ও অসঙ্গতি সমূহ দূরীকরণের আহবান জানিয়ে প্রস্তাবিত ১১ দফা আদায়ে রাজবাড়ী এক বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

১০ আগষ্ট শনিবার সারে সাতটায় রাজবাড়ী রেলস্টেশনে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মিরা এ আয়োজন করে।

রাজবাড়ী রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর ১১ দফা সমূহ ঃ

১) বাংলাদেশের মহান সংবিধানের ১৫২ নং অনুচ্ছেদের আলোকে গঠিত শৃঙ্খলা বাহিনী হিসেবে বাংলাদেশ রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী কে বেসামরিক শৃঙ্খলা বাহিনী হিসেবে অবশ্যই সংবিধান, রুলস অব বিজনেস- ১৯৯৬, এবং রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর কাজের ধরণ অনুসারে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের জন্য প্রযোজ্য Allocation Among the Ministries as per Rules of Business-1996 (Revised upto 2017) মেনে বাহিনীর তত্ত্বাবধান ও সংস্থাপন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন দিতে হবে। সংবিধানের ১৫২ নং অনুচ্ছেদ এর আলোকে গঠিত শৃঙ্খলা বাহিনী কখনো সংস্থার অধীনে পরিচালিত হয় না এবং রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী আইন-২০১৬ এর ৮ এর ১ ধারা মোতাবেক বাহিনীর এ দায়িত্ব সরকার অর্থ্যাৎ মন্ত্রণালয়কেই দেয়া হয়েছে।

২) রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী আইন-২০১৬, সংবিধান ও রুলস অব বিজনেস-১৯৯৬ এর সাথে সাংঘর্ষিক হলে সংবিধানকে প্রাধান্য দিয়ে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যগণকে সিভিল কর্মচারী হিসেবে বিবেচনা বন্ধ করতে হবে। কেন না সিভিল কর্মচারী পরিগণিত করলে সাপ্তাহিক ছুটি ০২ (দুই) দিন প্রযোজ্য হয়, কিন্তু রেলওয়ে বাহিনীর সদস্যরা সাপ্তাহিক ছুটি পায়না নৈমিত্তিক ছুটি পায় শুধু।

৩) প্রজাতন্ত্রের সকল শৃঙ্খলা বাহিনী রেশন ও ঝুঁকিভাতা পায়, এমনকি রেলওয়ে পুলিশ সহ রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর শূন্য পদে এসে কাজ করা আনসার সদস্যগণও রেশন ও ঝুঁকিভাতা পায়। আইনের বিধান অনুগামী না হয়ে অধিদপ্তরের অধীন থাকায় রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীই এ সুবিধা পায় না। তাই বাহিনীকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিয়ে গিয়ে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর রেশন ও ঝুঁকিভাতা প্রাপ্তি নিশ্চিতে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

৪) প্রতিদিন ০৮ (আট) ঘন্টার বেশি চাকুরি করানো হলে অতিরিক্ত কর্ম ঘন্টার জন্য দ্বিগুণ হারে ওভার টাইম/অধিকাল ভাতা দিতে হবে।

৫) নিয়োগ বিধি সংশোধন করে প্রতি বছর শূন্য পদের বিপরীতে জনবল নিয়োগ করতে হবে এবং ০৩ (তিন) বছর পর পর শূন্য পদে নিয়মিত পদোন্নতি প্রদান করতে হবে। ডিপার্টমেন্টাল সদস্য থেকে “অফিসার ও সদস্য” পদ সমূহে ৭০% পদোন্নতির ব্যবস্থা করতে হবে।

৬) রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর মাঠপর্যায়ের “চেইন অব কমান্ড” কোনো সিভিল অফিসারের হাতে থাকবে না। চার্টার অব ডিউটি মেনে শুধু রেল সম্পত্তি সুরক্ষা ডিআরএম/জিএম মহোদয় এর নিকট দায়বদ্ধ থাকবে বাহিনীর কর্মকর্তাবৃন্দ। এসিআর, পদোন্নতি প্রভৃতি অন্যান্য শৃঙ্খলা বাহিনীর অনুরূপ পদ্ধতিতে হবে।

৭) আজ্ঞবাহিনীর সমন্বয় পূর্বক রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি পদে বিদ্যমান বেতন বৈষম্য দূর করতে হবে।

৮) বিগত সামরিক শাসন আমলে জারীকৃত অধ্যাদেশ ২০১৬ সালে আইনে পরিণত হলে ও আইন বাস্তবায়নে কোনো বিধিপ্রণয়ন করা হয়নি বিগত ০৮ (আট) বছরেও। এমনকি ২০১৮ সালের পরে কোনো নিয়োগও সম্পন্ন করা হয়নি; জনবল ঘাটতির কারণে অতিরিক্ত ডিউটি করতে হয়। বিধায় সকল শূন্যপদ পূরণে দ্রুত নিয়োগ দিতে হবে।

৯) ব্যারাক ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা নির্মাণ করতে হবে।

১০) সিকিউরিকি ম্যানুয়েল-১৯৮৫ মেনে চার্জ প্রদান করতে হবে।

১১) এ ন্যায্য দাবী নিয়ে সাময়িক কর্মবিরতিতে যাওয়া বাংলাদেশ রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সকল অফিসার ও সদস্যদের বিরুদ্ধে কোনো ধরণের বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তার নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে। অন্যথায় এ একই ইস্যু নিয়ে সর্বাত্মক কর্মবিরতির ঘোষণা দেয়া হবে।