রাজবাড়ী প্রতিনিধিঃ
রাজবাড়ীর পাংশায় মাটিকাটাকে কেন্দ্র করে মারধর ও বাড়িঘর ভাঙচুর করার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (৯ মে) বিকেল চারে ৪টার দিকে উপজেলার মৌরাট ইউনিয়নের মালঞ্চী গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় মারধরের শিকার রাজু শেখ (৩৪) নামে এক ব্যক্তি পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
রাজু উপজেলার মৌরাট ইউনিয়নের মালঞ্চী গ্রামের তোফাজ্জেল হোসেনের ছেলে।
রাজুর চাচা নাজিমউদ্দিন শেখ বলেন, ‘মাটি কাটানিয়ে রাজু ও শফিকুল নামে একজনের সাথে রাজুর ঝামেলা বাধে। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রথমে মোবাইল ফোনে বাগবিতন্ডা হয়। পরে দুইজনের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এরপর শফিকুল লোকজন নিয়ে রাজুর বাড়িঘর ভাঙচুর করে এবং পরবর্তীতে তাকে বেধরক মারপিট করে। এখন রাজু পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে একটি ছেলে এসে প্রথমে রাজুর খোঁজ করে। তারপর ৩০ থেকে ৩৫জন সন্ত্রাসী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এসে রাজুর বাড়ির ঘরের তালা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে ঘরের ভেতর ভাঙচুর চালায়। চাপতি, কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে ঘরের ভেতররের সবকিছু ভেঙে রেখে যায়। তারপর রাজুকে ধরে পেটাতে পেটাতে পাংশার দিকে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। এক পর্যায়ে স্থানীয়রা রাজুকে উদ্ধার করে আমাদের খবর দিলে আমরা তাকে পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই। এখন সে চিকিৎসাধীন আছে। ভাঙচুরের ঘটনায় রাজুর ৫ থেকে ৬ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতি সাধন হয়েছে বলে তিনি জানান। এই ঘটনায় তারা থানায় অভিযোগ দায়ের করবেন বলেন জানিয়েছেন।
শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি মাটির ব্যবসা করি। রাজুর এলাকা থেকে আমি কিছু মাটি কিনেছি। সেই মাটি ভেকু দিয়ে কেটে বিক্রি করছি। রাজু এসে আমার কাছে কয়েক গাড়ি মাটির দাবি করে। আমি তাকে এই মাটি দিতে রাজি না হওয়ায় আমাকে মোবাইল ফোনে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে হুমকি ধামকি দিয়ে আমাকে ভাঙ্গা ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় ঠাকুরের দোকানে দেখা করতে বলে। আমি সেখানে আসার পর সে উত্তেজিত হয়ে আমার উপর কাঠ ও বাঁশের লাঠি দিয়ে আঘাত করে। পরে স্থানীয় লোকজন পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ করে। পরে আমার ছোট ভাইব্রাদার ও বন্ধু বান্ধবরা বিষষটি জানতে পেরে রাজুর বাড়িতে রাজুকে খুঁজতে যায়। তাকে না পেয়ে তার তালাবদ্ধ ঘরে দুইচারটা বাড়িটারি দিয়েছে হয়তো। পরে জানতে পারি তার বাড়ির ঘরের ভেতর ভাঙচুর করা হয়েছে। এই ভাঙচুর কে বা কারা করেছে তার আমার জানা নেই।’
আর রাজুকে মারধরের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ছেলেরা রাজুকে ধরে নিয়ে মোটর সাইকেলে করে স্থানীয় সেলিম ভাইয়ের কাছে নিয়ে যাচ্ছিল। তখন সে মোটর সাইকেল থেকে লাফ দিতে গিয়ে পরে যায়। এতে মোটরসাইকেল চালকেরও মারাত্বকভাবে পা কেটে গেছে।’
পাংশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, ‘মাটি কাটাকে কেন্দ্র করে দুই জনের মধ্যে মারামারি ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’