মোঃ আহসান হাবীব নাহিদঃ

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে কাজ না করেই মসজিদের নামে বরাদ্দকৃত সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে সংরক্ষিত ইউপি সদস্য ও প্রকল্প সভাপতি আমেনা বেগমের বিরুদ্ধে।

এ বিষয়ে মসজিদ কমিটির কোষাধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমান গত ১২ জুলাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) দফতরে অভিযোগ দাখিল করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কামারপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব কেশালীডাঙ্গা দাসের ভিটা জামে মসজিদ ভড়াটকরণ ও রেলস্টেশনের পূর্ব পাশে কলেজ রোড সংস্কারের জন্য ২০২১-২২ অর্থবছরে টেস্ট রিলিফ (কাবিটা/টি আর) প্রকল্পের মাধ্যমে ২ লাখ ৮৮ হাজার টাকা উন্নয়ন বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু বরাদ্দের টাকায় মসজিদের চারপাশে ২৫২০০ ঘনফুট মাটি ভরাট করার কথা থাকলেও সেখানে মাটি ভরাটের কোন কাজই করা হয়নি।
মসজিদের বরাদ্দ ও মাটি ভরাট সম্পর্কে মসজিদ কমিটি জানতে চাইলে প্রতিত্তোরে মসজিদ ভরাট হয়ে গেছে, আর কোন কাজ হবে না বলে সাফ জানিয়েছে প্রকল্প সভাপতি ও সংরক্ষিত ইউপি সদস্য আমেনা বেগম।
অভিযোগকারী মসজিদ কমিটির কোষাধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘মসজিদের নামে বরাদ্দ এসেছে দেড়মাস আগে অথচ মসজিদে কেন এখনো মাটি ভরাট করা হচ্ছে না। মসজিদের চারপাশে মাটি না থাকায় অনেক ঘুরে মসজিদে প্রবেশ করতে হয়। তাছাড়া মাটি না থাকায় অনেক কষ্টের চাঁদার টাকায় গড়ে তোলা এ মসজিদের ভবনটি ঝুঁকিতে পড়বে। বিষয়টি তখন মসজিদ কমিটির সভাপতিসহ অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে কথা বলি। এরপর সবাই প্রকল্প সভাপতিকে গিয়ে মাটি ভরাটের কথা বললে তিনি মাটি আর ভরাট করা হবে না হলে জানান। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দাখিল করেছেন তারা।
মসজিদের মুয়াজ্জিন জাহাঙ্গীর মিয়া বলেন, ‘এখানকার মেম্বারকে টাকার কথা বলায় ওনি মসজিদে এসেই মসজিদ নির্মাণ সভাপতি আব্দুর রশিদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন। মেম্বার মসজিদে এক টুকরো মাটিও ফেলেনি। মেম্বার- চেয়ারম্যান পুরো টাকাই নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিয়েছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য আমেনা বেগমের সঙ্গে একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে তার স্বামী কামারপাড়া ইউনিয়নের দাফাদার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কাজ করতে চেয়েছিলাম কিন্তু বৃষ্টি আর মাটি না পাওয়ায় মসজিদ ভরাটের কাজ করা যায়নি। ওই কাজ অন্য জায়গায় করেছি।
এ বিষয়ে মসজিদ কমিটির বর্তমান সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা অনেক কষ্টে মসজিদ নির্মাণ করছি। মসজিদে কোন মাটি ভরাটের কাজ হয়নি। মসজিদের টাকা আত্মসাত করা কি মানুষের পক্ষে সম্ভব?
এদিকে, রেলস্টেশনের পূর্ব পাশে কলেজ রোড সংস্কারের কথা বলা হলেও সেখানে গিয়ে মাটি ভরাট কিংবা সংস্কারের কোন নমুনা দেখা যায়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, ‘পূর্ব কেশালীডাঙ্গা দাসের ভিটা জামে মসজিদসহ দুটি কাজে ২০২১-২২ অর্থবছরে টেস্ট রিলিফ (টিআর) প্রকল্পের মাধ্যমে ২ লাখ ৮৮ হাজার টাকা উন্নয়ন বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবে সেখানে ৪০ দিনের কাজ হয়নি। ২০ দিন কাজ করা হয়েছে। মসজিদ কমিটির লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখবো।
মুঠোফোনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ রোকসানা বেগম বলেন, ‘বিষয়টি খতিয়ে দেখে তদন্ত সাপেক্ষে খুব দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।