তৌহিদুর রহমান জেলা প্রতিনিধিঃ
শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলায় দীর্ঘদিন থেকে বৃষ্টিপাত না হওয়ার ফলে আসন্ন আমন চাষ ব্যাহত হয়ে কৃষকের মাথায় হাত পড়েছে। আমন চাষের ভরা মৌসুমে এ বছর তেমন বৃষ্টিপাত না হওয়াতে উপজেলার কৃষকেরা আমন ফসলের জন্য জমি চাষ করতে পারছেনা। শুক্রবার ঝিনাইগাতী বড় মসজিদ সহ অন্যান্য মসজিদে জুম্মা নামাজের পর বৃষ্টির জন্যে বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। অথচ রোপা আমন চাষাবাদের জন্য উপযুক্ত সময় অতিবাহিত হচ্ছে। অনাবৃষ্টি ও খরার কারণে ফসলি জমিতে পানির তীব্র সংকট দেখা দেওয়াতে এলাকার পাঁচ শতাধিক একর জমি আমন চাষাবাদ এবার ব্যাহত হবে বলে জানা গেছে। এমন পরিস্থিতিতে কৃষকরা হতাশ হয়ে পড়েছে। কেননা অত্র উপজেলার ৯৫% ভাগ কৃষকই রোপা আমন ধানের উপর নির্ভরশীল।
প্রাকৃতিক বৈরী আবহাওয়ায় বৃষ্টির পানি না পেয়ে এবং রোপা আমন বীজ ক্ষেতে রোপন করতে না পেরে অত্র এলাকার দরিদ্র কৃষকরা ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কেননা শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার অধিকাংশ লোকই দারিদ্র ও প্রান্তিক চাষী, যাদের আয়ের একমাত্র উপায় কৃষি ফসল। নিজেদের কষ্টে অর্জিত আমন ফসল এলাকার চাহিদা মিটানোর পর দেশের বিভিন্ন স্থানে খাদ্য চাহিদার যোগান দিয়ে থাকে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাব মতে এবছর ঝিনাইগাতী উপজেলায় ১৫ হাজার ২শত ৩১ হেক্টর জমিতে আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সেই জমিতে চাউলে উৎপাদনের মাত্রা ধরা হয়েছে ৩৩ হাজার ৪ শত ২০ মে:টন। কিন্তু বৈরী আবহাওয়া ও অধিক খরার কারণে তাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হওয়ার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, আমন চাষাবাদের উপযোগী মোট জমির ৪/১ ভাগ জমিতে এখন পর্যন্ত আমন বীজ রোপন করা সম্ভব হয়নি। ঝিনাইগাতী উপজেলার উল্টর ও দক্ষিণ অঞ্চল সহ অধিকাংশ এলাকায় পানির অভাবে বোরো ফসল করা সম্ভব হয়না। তাই এসব এলাকার কৃষকরা সারা বছরের খাদ্যের যোগান দিতে আমন ফসলের দিকে তাকিয়ে থাকে। রামেরকুড়া গ্রামের কৃষক আঃ আলিম,মোতালেব, কান্দলী গ্রামের আব্দুল হালিম, বনগাঁয়ের আলআমিন ভারুয়ার হামিদুল,হারেজ মিয়া শালচুড়ার রাসেল, করিম সহ শতাধিক কৃষক এ প্রতিনিধিকে জানান, সারা বছরের খাদ্যের জোগান হিসেবে আমরা মূলত আমন ফসলের উপর নির্ভর করে থাকি কিন্তু এবছর আমন ফসল করতে না পারলে প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকরা অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাতে হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ হুমায়ুন দিলদারের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমন চাষের এখনও সময় আছে, কেননা পুরো আগষ্ট মাসই বৃষ্টির মাস। প্রাকৃতিক বিপর্যয় কাটিয়ে ২/৪ দিন বৃষ্টি হলেই কৃষকরা তাদের কাংঙ্খিত ফসল রোপন করতে পারবে। আর যদি সঠিক সময়ে বৃষ্টিপাত না হয়, সে ক্ষেত্রে ঝিনাইগাতী উপজেলার কৃষকদের জন্য হবে অপূরনীয় ক্ষতির কারণ অপরদিকে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। সেচপাম্পের মাধ্যমে অনেকেই রোপন করেছে যাদের সেচপাম্পের ব্যবস্থা নেই তারা বিপাকে পড়েছে এ সময়ে বিষ্টির কোন বিকল্প নেই বলে জানান।