রাজবাড়ীতে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে কিশোর মৃদুল হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদন্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং চারজনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত। রাজবাড়ী জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রুহুল আমীন দুপুরে এই রায় দেন।
রায়ের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন আসামীপক্ষের আইনজীবী নেকবার হোসেন মনি।
মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামীর নাম রুবেল মন্ডল (২৯)। তিনি রাজবাড়ী সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের বাসিন্দা। রুবেলের বাবার নাম সালাম মন্ডল। তিনি মামলার ২ নম্বর আসামী ছিলেন। যাবজ্জীবন প্রাপ্ত আসামীরা হলেন, রাফিজুল মন্ডল (৩৪), পিয়ারুল সরদার (৩৪), মো. রায়হান (৩৪) ও মো. পিয়াল (২৮)। এছাড়া এলেম (২৯) ও ফরিদ ফকীর (৩৫) নামে দুইজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
নিহত কিশোরের নাম নাহিদ হাসান মৃদুল (১৭)। নাহিদের বাবার নাম মমিন মোল্লা। তিনি রাজবাড়ী সদর উপজেলার দাদশী ইউনিয়নের আগমারাই গ্রামের বাসিন্দা। মৃদুল ইয়াছিন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিল।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ১৯ জুন সকাল সাড়ে ১১টার দিকে রাজবাড়ী শহরের ইয়াছিন উচ্চ বিদ্যালয়ের ফটক থেকে আসামীরা মৃদুল ও মৃদুলের ভাগনে মেহেদী হাসানকে রেলের ক্যারেজে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে তার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে প্রথমে ধারালো অস্ত্র দিয়ে পেটে আঘাত করে। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মৃদুল মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এরপর তাকে এলোপাথারী মারধর করা হয়। মেহেদী হাসান দৌড়ে এসে খবর দিলে আশেপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। এসময় আসামীরা পালিয়ে যায়। তাকে উদ্ধার করে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হলে তাকে ফরিদপুর স্থানান্তর করা হয়। ফরিদপুরে দুপুরে মৃদুল মারা যায়।
হত্যাকান্ডের মৃদুলের বাবা বাদী হয়ে রাফিজুলকে প্রধান ও রুবেলকে দুই নম্বর আসামী করে সাতজনেরনাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও পাঁচ-ছয়জনকে আসামী করে ২১ জুন রাজবাড়ী সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। আদালত দীর্ঘ যুক্তিতর্ক শেষে মামলার রায় ঘোষণা করেন। তবে রায়হান মামলা দায়ের হওয়ার পর থেকে পলাতক রয়েছে। অপরদিকে পিয়াল জামিনে মুক্ত হয়ে পলাতক রয়েছে। অন্য আসামীরা আদালতে উপস্থিত ছিল।
আসামীপক্ষের আইনজীবী নেকবার হোসেন মনি বলেন, এই রায়ে আমরা সংক্ষুদ্ধ হয়েছি। আমরা উচ্চ আদালতে যাবো। আশা করছি, উচ্চ আদালতে আমরা ন্যায় বিচার পাবো।