সঞ্জয় দাস ,নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি:

নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলায় হাজার হাজার গরু লাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি) বা চর্মরোগে আক্রান্ত হয়েছে। তবে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে এ রোগে আক্রান্ত গরুর সংখ্যা ৬ শতাধিক। দিন দিন আক্রান্ত গরুর সংখ্যা বেড়ে চলায় খামারিদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

কৃষক ও খামারিরা জানান, এই রোগে আক্রান্ত গরু-বাছুর প্রথমে জ্বরে আক্রান্ত হয় ও একপর্যায়ে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দেয়। জ্বরের সঙ্গে মুখ ও নাক দিয়ে লালা বের হয় এবং পা ফুলে যায়। একপর্যায়ে আক্রান্ত গরুর শরীরের বিভিন্ন জায়গার চামড়া পিণ্ড আকৃতি ধারণ করে এবং লোম উঠে যায়। পরে ক্ষত সৃষ্ট হয়। ধারাবাহিকভাবে এই ক্ষত শরীরের অন্য জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। গরু ঝিম মেরে থাকে ও কাঁপতে শুরু করে। কিডনির ওপর প্রভাব পড়ার ফলে গরু মারাও যায়।

সরেজমিনে বাহাগিলি ইউনিয়নের উত্তর দুরাকুটি পশ্চিমপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, স্থানীয় কালা মিয়া, আমিনুর রহমান, আনারুল ইসলাম, ফয়জুল মিয়ার গরু ছাড়াও এই গ্রামের শতাধিক গরু লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়েছে।

একই গ্রামের খামারি ফেরদৌস মিয়া বলেন, ‌‌‘খামারে ১০টি গরু আছে। প্রথমে একটি গরু এ রোগে আক্লান্ত হয়। ধীরে ধীরে বাকি গরুগুলোর মধ্যেও এ রোগ দেখা দেওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছি।’তিনি আরও বলেন, ‘গরুগুলোর চিকিৎসা করাতে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা ব্যয় হলেও একটা গরুও সুস্থ হয়নি।’

বাহাগিলি ইউনিয়নের উত্তর দুরাকুটি পশ্চিমপাড়া গ্রাম ছাড়াও মাগুড়া ইউনিয়নের আকালি বেচা পাড়ার এনামুল হক, আব্দুস সালাম, ধনী পাড়ার মাজেদুল হকের গরুসহ আরো অন্যান্য খামারির হাজার হাজার গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন নাহিদ সুলতান বলেন, ‘গ্রাম পর্যায়ে চিকিৎসা দেওয়ার কোন ব্যবস্থা আমাদের নেই। চিকিৎসা নিতে হলে অফিসে আসতে হবে।’

এসময় তিনি আরও বলেন, ‘আক্রান্ত গরুর চিকিৎসার ক্ষেত্রে বেশ সর্তকতা অবলম্বন করতে হয়। যেমন-অসুস্থ গরুকে ইনজেকশন দেওয়ার পর একই সিরিঞ্জ বার বার ব্যবহার করা যাবে না। এতে করে অন্য গরুও আক্রান্ত হতে পারে।’