রাজবাড়ীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে আপত্তিকর পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার মহিলা দলের সেই নেত্রীর বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। জেলা মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের উদ্যোগে প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে গতকাল শুক্রবার সকাল পৌণে ১১টার দিকে এই কর্মসূচি পালিত হয়।
গ্রেপ্তার নেত্রীর নাম সোনিয়া আক্তার ওরফে স্মৃতি (৩৫)। তিনি স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের সংগঠন রাজবাড়ী ব্লাড ডোনার্স ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও জেলা মহিলা দলের সদস্য। সোনিয়া রাজবাড়ী শহরের ৩ নম্বর বেড়াডাঙ্গা এলাকায় বসবাস করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতাকর্মীরা প্রথমে শহরের পান্না চত্বর এলাকায় জড়ো হয়। সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। এসময় ‘জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু, বিএনপির চামড়া তুলে নেবো আমরা, স্মৃতির দুই গালে জুতা মারো তালে তালে, শেখ হাসিনা ভয় নাই রাজপথ ছাড়ি নাই’ প্রভৃতি স্লোগান দেওয়া হয়। মিছিলটি শহরের রেলগেট প্রদক্ষিণ করে প্রেসক্লাবের সামনে এসে শেষ হয়। এরপর মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ কর্মসূচি পালিত হয়। কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি ফরিদুর রহমান। এতে বক্তব্য দেন মামলার বাদী সামসুল আরেফিন চৌধুরী, নাহিদ মিয়া, আশরাফুল ইসলাম, সজীব মোল্লা, মুরাদ শেখ প্রমূখ। এতে শতাধিক তরুণ ও যুবক অংশগ্রহণ করে।
বক্তারা বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার ৭৬তম জন্মদিনে কটুক্তি ও অপমান করে সোশ্যাল মিডিয়াতে একটি বিভ্রান্তিমূলক পোস্ট দেন সোনিয়া আক্তার। শুধু তাই না সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজকে টোল ভিডিও ও বিভিন্ন ছবি এডিটিং করে, বাজে বাজে মন্তব্য করে। সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। সোনিয়া বিএনপির এজেন্ট। রাজবাড়ীর এই কুলাঙ্গারের পক্ষে বিএনপির যেসব নেতা কথা বলবে তারাও কুলাঙ্গার। রাজবাড়ীর মাটিতে বঙ্গবন্ধুর কন্যাকে নিয়ে কোনো কথা বলা যাবে না। তাহলে আমরা চুপ করে বসে থাকবো না। আমরা এসবের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবো। আমরা প্রতিবাদে নেমেছি।
পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলা হয়, এই কুলাঙ্গার স্মৃতিকে গ্রেপ্তার করা না হলে আরও কুলাঙ্গার জন্ম নিতো। তাঁর পক্ষে বিএনপির কোনো নেতা বা কর্মী যদি আন্দোলন সংগ্রাম করে আমরা তাদের রুখে দাঁড়াবো। আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসবকলীগসহ সকল অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীদের রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছি। তা না হলে এসব কুলাঙ্গার রাজবাড়ীর সুন্দর পরিবেশকে কুড়ে কুড়ে ধ্বংস করে দিবে।
রাজবাড়ী সদর থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার সন্ধ্যায় সামসুল আরেফিন চৌধুরী নামের স্থানীয় এক আওয়ামী লীগের নেতা রাজবাড়ী সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে অভিযোগটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়। রাতেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বুধবার তাঁর জামিনের আবেদন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।