রাজবাড়ী প্রতিনিধিঃ
রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের ডাঙ্গীপাড়ায় ছয়মাস বয়সী এক শিশুর রহস্যময় মৃত্যু হয়েছে। শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, শিশুটির মা শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে।
নিহত শিশুর নাম আবদুল্লাহ প্রামাণিক। তার বাবার নাম আল আমিন প্রামাণিক (২৬)। তিনি বাহাদুরপুর ইউনিয়নের ডাঙ্গীপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় দুই বছর আগে আল আমিনের সঙ্গে মিম আক্তারের (২০) বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দাম্পত্য কলহ ছিল। প্রায়ই তাদের মধ্যে ঝগড়াঝাটি হতো। প্রায় তিন মাস আগে সন্তান নিয়ে কুষ্টিয়ায় বাবার বাড়িতে চলে যায় মিম। এরপর স্বামীর বিরুদ্ধে আদালতে যৌতুকের দাবিতে মামলা দায়ের করেন। পরে মামলাটি মিমাংসা করা হয়। ২৯ জানুয়ারি স্বামীর বাড়িতে আসে মিম।
শ্বশুরবাড়িতে আসার পরে তিনবার পালিয়ে বাবার বাড়িতে চলে যাওয়ার চেষ্টা করে মিম। কিন্তু এলাকাবাসী তাকে রাস্তা থেকে ফিরিয়ে এনেছে। কয়েকদিন ধরে আবদুল্লাহর শারীরিক সমস্যা হয়। জ্বর হয়ে ছিল। তাকে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছিলো। সোমবার শিশুটির বাবা-দাদা আখ খেতে কাজ করতে যায়। মায়ের দুধ খাওয়ার কিছু সময় পরে শিশুটি মারা যায়। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে খবর পেয়ে বাবা-দাদারা বাড়িতে ছুটে আসে। রাতে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
শিশুটির বাবা আল আমিন প্রামাণিক বলেন, ‘আমার স্ত্রীকে প্রায়ই আমাকে ও সন্তানকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিতো। আমাদের ধারণা, স্ত্রীই গলা টিপে ছেলেকে হত্যা করেছে। আমি সন্তান হত্যার বিচার চাই।’
পাংশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান বলেন, শিশুটির নানার মানসিক সমস্যা ছিল। আবদুল্লাহর মায়েরও কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীনতা থেকে থাকতে পারে। শিশুটির গায়ে আঘাতের কোনো চিহ্ন নেই। চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা হয়েছে, তারাও বিষয়টি নিশ্চিত হতে পারছে না। পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদেও হত্যার আলামত পাইনি। রাতে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সকালে ময়নাতদন্তের জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর শিশুটির মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।