মোহাম্মদ আলী উত্তরাঞ্চল প্রতিনিধি:
৩২ ঘন্টা কাঁফনের কাপড় শরীরে জড়িয়ে বগুড়া শহিদ চান্দু স্টেডিয়ামে ভেন্যু বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেছেন হুমায়ন আহমেদ রুমেল(৩৬) নামের বগুড়া শহরের এক যুবক। রুমেল নামের ওই যুবক বগুড়া শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামের ভেন্যু বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে আমরণ অনশন করেন।গত রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বগুড়া শহরের সাতমাথা পার্কিং এলাকায় এ অনশন শুরু করেন তিনি। আমরণ অনশনকারী রুমেল বগুড়া শহরের নাটাইপাড়া এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত জালাল উদ্দিনের ছেলে। তিনি চ্যানেল বগুড়া নামে ফেসবুক পেজের কন্টেন্ট ক্রিয়েটর। গত সোমবার বিকেলে রুমেল জানান, মুশফিক, তামিমরা এই শহীদ চাঁন্দু স্টেডিয়ামে খেলে আজ জাতীয় পর্যায়ের দেশের জন্য অবদান রাখছে। জাতীয় ক্রিকেটের বিভিন্ন ইউনিটে বগুড়া ১০ জন খেলোয়ার খেলছে। যারা এই ক্রিকেটের আতুড়ঘর থেকে বেড়ে উঠেছেন। শুধু বগুড়ার মানুষ না সারাদেশের ক্রীড়া প্রেমীদের দাবি যে এই আতুড়ঘরে আবারও বিসিবি তার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে আন্তজার্তিক মানের খেলার আয়োজন করবে। সোমবার বিকেলে তার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি এখন পর্যন্ত ৩২ ঘন্টা অনশন করেছি। যতোখন পর্যন্ত ভেন্যু বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা না হয়েছে ততোক্ষণে আমি আমার অনশন চালিয়ে যাবো। বগুড়া বাসির প্রাণের দাবি পূরণ না হলে আমি ঠিকই অনশন টিকিয়ে রাখতে চাই। এতে আমার প্রাণ চলে গেলেও তাতেই রাজি। তিনি আরো বলেন,বগুড়া শহীদ চান্দু স্টেয়িামে যদি খেলা না হলেও একটা আশার জায়গা ছিল।স্টেডিয়াম লাইফ সাপোর্টে ছিল। খেলা হচ্ছিল না । তারপরও শান্তনা ছিল বগুড়ায় একটি স্টেডিয়াম এখনও টিকে আছে। একদিন না একদিন খেলায় ফিরবে। কিন্তু যখন এর আনুষ্ঠানিক মৃত্যু ঘটে গেলে একেবারে সবকিছু নিয়ে গেলো। এখানকার কর্মকর্তারা প্রত্যাহার হল, যন্ত্রপাতি প্রত্যাহার হল, এমনকি মাঠের সীমানার দড়ি পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হল। তখন মনে হল আমাদের গর্বের জায়গা আর কিছুই থাকলো না। ঠিক তখন আমার কাছে মনে হয়েছে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে।এবং আমার পক্ষেই এটা সম্ভব। অনশন সবাই পারে না। ধর্যও সবার নেই। আমি এটা পারবো। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অনশন করে অনেক কিছুই বাস্তবায়ন করা হয়েছে। মূলত সে লক্ষ্যে আমার এ অনশন। তবে আমি যদি এটা করতে পারি তবেই এই দাবি বাস্তবায়ন করা সম্ভব।আমরণ অনশনের বিষয়ে তিনি বলেন, বিসিবি তার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করা অবদি এ অনশন চালিয়ে যাবেন।জানা যায়, গত ২ মার্চ বৃহস্পতিবার বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে বগুড়া শহীদ চাঁন্দু স্টেডিয়াম ভেন্যু বাতিল করে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) কাছে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এদিকে ঘোষণা আসার পর গত বৃহস্পতিবার থেকে বগুড়া জেলা শহররে ক্রিকেটপ্রেমীদের ভিতরে শুরু হয়েছে তোলপাড়। এদিকে জেলা ক্রীড়া সংস্থা দাবি করেছে বিসিবির আনিত অভিযোগ ‘অসহযোগিতা’ তা সত্য নয়। অপরদিকে বৃহস্পতিবার এমন ঘোষণার পর বগুড়া শহীদ চাঁন্দু স্টেডিয়ামে কর্মরত সকলকে প্রত্যাহার করেছে বিসিবি ও সকল মালামাল গুটিয়ে নিয়ে মিরপুর স্টেডিয়ামে পাঠানোর জন্য বলা হয়েছে। এ ঘটনার পরপরই স্টেডিয়ামটিতে বিসিবি আর কখনো ক্রিকেট ম্যাচ আয়োজন করবে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়ায় বগুড়ার ক্রীড়াবিদ, সংগঠকসহ ক্রিকেট প্রেমীরা হতাশ হয়েছেন। এঘটনার পর থেকে বগুড়ায় সকল স্তরের মানুষ বিসিবির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন পালন করে যাচ্ছেন। বগুড়াবাসি মনে করেন রুমেল এর ওই আমরন অনশনের মধ্যে দিয়ে তাদের প্রত্যাশা পূরণ হবে ইনশাআল্লাহ।