রাজবাড়ীতে ভাইয়ের জামিন নিতে এসে প্রতারক চক্রের খপ্পরে পরে টাকা ও সোনার দুল খুঁইয়েছেন এক নারী। তাঁর নাম নাসিমা বেগম। নাসিমার স্বামীর নাম হামিদ মল্লিক। তিনি রাজবাড়ী সদর উপজেলার বাসিন্দা। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজবাড়ী আদালত এলাকায় এই প্রতারণার ঘটনাটি ঘটে।
প্রতারনার স্বীকার ওই নারী নাসিমা বেগম বলেন, তাঁর ভাই একটি মামলায় কারাগারে আছেন। তিনি সকালে বাড়ি থেকে বের হন। ভাইয়ের জামিন করার জন্য আদালত প্রাঙ্গনে আসেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দুইজন ব্যক্তি তাঁর সঙ্গে কুশলাদি বিনিময় করেন। তিনি কি করতে আদালতে এসেছেন তা জানতে চান। ভাইয়ের জামিনের জন্য এসেছেন বলার পর তাঁরা জামিনের ব্যবস্থা করে দিতে চান। তাকে রাস্তার দিকে ডেকে আনেন। এরপর তাদের কথা মতো কানে থাকা সোনার দুল খুলে ব্যাগের মধ্যে রাখেন। জামিনের জন্য নিয়ে আসা ৫০ হাজার টাকা ও সোনার দুল তাঁর কাছ থেকে কৌশলে নিয়ে নেওয়া হয়। তাকে কিছুদুরে অবস্থিত বৈদ্যুতিক খুঁটির পাশ থেকে একটি সবুজ পাথর নিয়ে আসতে বলে। তাহলে তিন দিনের মধ্যে ভাইয়ের জামিন হয়ে যাবে। আর শর্ত দেয়, পিছনের দিকে ফিরে তাকানো যাবে না। তিনি খুঁটির কাছে গিয়ে সবুজ পাথর খুঁজতে থাকেন। কিন্তু না পেয়ে ফিরে আসেন। এসময় দেখেন ওই দুই ব্যক্তি ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দিয়েছে। তখন তিনি টাকা ও সোনার দুল খোঁয়া গেছে বুঝতে পারেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ইজিবাইক চালক আলমগীর হোসেন বলেন, আমি ওই নারীর সঙ্গে দুইজন পুরুষ লোক দেখেছি। তিনি পুরুষ দুই ব্যক্তির কিছুটা পিছনে ছিলেন। কোথায় যাবেন জিজ্ঞেস করে ছিলাম। কথার কোনো জবাব দেয়নি। কিছু সময় পরে ওই নারীর চিৎকার শুনতে পাই। এসময় সোনার দুল ও টাকা খোয়া যাওয়ার বিষয়টি বুঝতে পারি।
রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন মোহাম্মদ ইব্রাহিম টিটন বলেন, ধারণা করা হচ্ছে স্কোপোলামিন ব্যবহার করা হয়েছে। এটা ব্যবহার করে মেন্টালি কন্ট্রোল করা যায়। এসময় ভূক্তভোগির হিতাহিত জ্ঞান থাকেনা। আদেশ অনুযায়ি কাজ করে।
তিনি বলেন, এটি হ্যান্ডসেক করে দেওয়া যায়। আবার কৌশলে নাকের মাধ্যমে প্রবেশ করানো যায়। পরিমানের ওপর নিয়ন্ত্রণের সময় নির্ভর করে।
রাজবাড়ী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন বলেন, প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে এই প্রতারক চক্র বাইরে থেকে এসেছে। এই চক্রটিকে আইনের আওতায় আনার জন্য আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে অপরিচিতদের সাথে কথা বলতে সাবধানতা বজায় রাখতে হবে