মোঃ ফিরোজ আহমেদ, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধিঃ
নওগাঁর রাণীনগর থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে দেশীয় জাতের খেজুরের গাছ।এক সময় আত্রাই উপজেলায় ব্যাপক খেজুর গাছ দেখা গেলেও বর্তমানে আর তেমন একটা দেখা যায় না এ ফলের গাছটি। বাজারে আম, জাম, কাঁঠাল, লিচুসহ বিভিন্ন ধরনের রসালো ফলে ভর্তি থাকলেও আর তেমন একটা দেখা মেলেনা দেশীয় খেজুরের গাছ। দেশীয় খেজুরের খুব বেশি কদর না থাকলেও এ ফল নানা রকম পুষ্টিগুনে সমৃদ্ধ।
পুষ্টিবিদদের মতে, দেশীয় খেজুরের মধ্যে রয়েছে ক্যালসিয়াম, সালফার, আয়রন, পটাসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ কপার, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন বি-৬, ফলিক এ্যসিড, আমিষ ও শর্করা। এছাড়াও দেশি পাকা খেজুর খেতেও খুব সুস্বাদু।এক সময় পথে-প্রান্তরে, মাঠে-ঘাটে ছিল সারি সারি খেজুর গাছ।ঐ মৌসুমে যেদিকে চোখ যেত দেখা যেত গাছে ঝুলে থাকা থোকা থোকা খেজুর। জ্যৈষ্ঠের শেষে থেকে শ্রাবন মাস পর্যন্ত গাছ থেকে খেজুরের ছড়ি সংগ্রহের উৎসবে মেতে উঠত গ্রামের কিশোর-কিশোরীরা। বর্তমানে দিনদিন গ্রামগঞ্জ থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে দেশীয় খেজুর গাছ।খেজুর গাছে শীতের প্রথম ভাগে ফুল আসে।
পরে ফুল থেকে পরিপক্ক হতে সময় লাগে প্রায় চার মাস।আষাড়ের প্রথম ভাগে পাকতে শুরু করে দেশি খেজুর গুলো। সবুজ রং থেকে গাঢ় হলদে হলে পরিপক্ক হয়। থোকা কেটে লবন-পানিতে তিন থেকে চার ঘন্টা ভিজিয়ে রাখলে খেজুরগুলো পেকে যায়। এ খেজুরে প্রচুর পরিমাণ বিভিন্ন স্বাস্থ্যকর উপাদান রয়েছে। খেজুর হার্টের রোগীদের জন্য বেশ উপকারী। খেজুর রক্ত উৎপাদনে সহায়তা করে।এছাড়াও ফলটি হজমবর্ধক এবং পাকস্থলি ও যকৃতের শক্তি বাড়ায়। খেজুরের বীজ রোগ নিরাময়, খেজুর ফুলের পরাগরেণু পুরুষের বন্ধ্যাত্ব দূর করে শুক্রাণু বৃদ্ধি করতেও সাহায্য করে।
আবহাওয়া ও জলবায়ুগত কারনে দিনদিন খেজুর গাছ মরে যাচ্ছে এবং অযত্ন-অবহেলায় যত্রতত্র বেড়ে ওঠা এ গাছ মানুষের অনেক উপকারে আসলেও তেমন একটা কদর নাই বললেই চলে। যে কারনে আর পূর্বের মতো এ গাছ দেখা যায় না। এছাড়া দিন দিন ইটভাটায় খেজুর গাছ জ্বালানী হিসাবে ব্যবহার বৃদ্ধির কারনেও কমতে শুরু করেছে উপকারী এ গাছটি।