মোঃ মুক্তাদির হোসেন, স্টাফ রিপোর্টারঃ

গাজীপুরের কালীগঞ্জে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা পরিচালনা কমিটির আহবায়ক, স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে নিহত সাবেক এমপি শহীদ ময়েজউদ্দিন আহমেদের ৩৯তম শাহাদাৎ বার্ষিকী বিভিন্ন কর্মসূচীর মাধ্যমে পালিত হয়েছে।

আজ ২৭ শে সেপ্টেম্বর রোজ বুধবার সকাল ০৯ ঘটিকার সময় বনানী কবরস্হানে শহীদ ময়েজ উদ্দিন আহমেদে এর কবর জিয়ারত করেন, এবং কবরে পুষ্প স্তবক অর্পন করেন মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক, শহীদ মো : ময়েজ উদ্দিন আহমেদ এর কন্যা এবং বাংলাদেশ আওয়ামী মহিলা লীগের সভাপতি ও কালীগঞ্জের মাটি ও মানুষের প্রান প্রিয় নেত্রী,মেহের আফরোজ চুমকি এমপি, বাংলাদেশ তাঁতী লীগের সভাপতি বাবু খগেন্দ্র দেবনাথ, শহীদ ময়েজ উদ্দিন আহমেদের ভাই ও সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ এর চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এস এম নজরুল ইসলাম, সাবেক কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ এর ভাইস চেয়ারম্যান, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এড্য: আশরাফী মেহেদী হাসান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আব্দুল মতিন সরকার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল গণী ভূইয়া, সাধারণ সম্পাদক এইচ এম আবু বকর চৌধুরী, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন পলাশ,ভাইস চেয়ারম্যান এড্যা: মাকসুদুল আলম, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শর্মিলি রোজারি, কালীগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র এস এম রবীন হোসেন, মোক্তারপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আলমগীর হোসেন, গাজীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোতাহার হোসেন, তাসলিমা রহমান লাভলী জাতীয় শ্রমিক লীগের কালীগঞ্জ উপজেলা সভাপতি কাজী মেরাজুল কবির হামীম, সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইকবাল হোসেন ভান্ডারী,কার্য নির্বাহী সদস্য মোঃ মুক্তাদির হোসেন, কালীগঞ্জ পৌর জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি আমজাদ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আরাফাত খন্দকার, উপজেলা আওয়ামী মহিলা লীগের সভাপতি জুয়েনা আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক মাহফুজা পারবিন,যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ঝর্না বাদল,সহ-সভাপতি মরিয়ম বেগম, সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াসমিন বেগম, কালীগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক সেলিনা আনোয়ার সহ আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ বনানী কবরস্থানে শহীদের কবরে শ্রদ্বাঞ্জলী অর্পণ ও শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।
পরে ১১টায় কালীগঞ্জ উপজেলা শহীদ ময়েজ উদ্দিন আহমেদের স্মৃতিস্তম্বে শ্রদ্বাঞ্জলী অর্পণ শেষে ১২টায় উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে উপজেলা লীগের কার্যালয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযুদ্ধা আব্দুল মতিন সরকার এর সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক এইচ এম আবু বকর চৌধুরী এর সঞ্চালনায় আলোচনা সভা টি অনুষ্ঠিত হয়েছে, আলোচনা সভা শেষে দোয়া পরিচালনা করেন মুনশুরপুর মদিনাতুল মনোয়ারা মাদ্রাসার পিন্সিপাল মাওলানা আবু হানিফ, দোয়া শেষে গন- ভোজ এর মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হয়।

অপরদিকে দুপুর ০২ টায় মোক্তাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উদ্যোগে নোয়াপাড়া শহীদ ময়েজউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের ও গন ভোজ এর আয়োজন করা হয়েছে, বিকাল ০৪ ঘটিকার সময় কালীগঞ্জ পৌরসভার ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের উদ্যোগে ঘোড়াশাল ফেরীঘাটে মিলাদ মাহফিলে মেহের আফরোজ চুমকি, এমপি, অংশগ্রহণ করেন। এ সময় গরীব দুঃখী মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়।
এ সময় মেহের আফরোজ চুমকি, এমপি, বলেন, ১৯৮৪ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর গণতন্ত্র তথা ভাত ও ভোটের অধিকার রক্ষায় স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে গাজীপুরের কালীগঞ্জে রাজ পথে মিছল চলাকালে নেতৃত্ব দেয়ার সময় কতিপয় সন্ত্রাসী তাঁর ওপর ছুড়ির আঘাতে , আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য নেয়া হলে কর্তব্যরত ডাক্তার উনাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন।

তিনি শাহাদাৎ বরণ করেন। শহীদ ময়েজ উদ্দিন আহমেদ ১৯৩০ সালের ১৭ মার্চ গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার মোক্তারপুর ইউনিয়নের বড়হরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঐতিহাসিক আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন। একজন বিচক্ষণ আইনজীবি ও রাজনীতিক হিসেবে অত্যন্ত সাহসীকতার সঙ্গে তিনি এ ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেন। তিনি দীর্ঘদিন বৃহত্তর ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, পরে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭০ এবং ১৯৭৩ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে গাজীপুরের কালীগঞ্জ নির্বাচনী এলাকা থেকে যথাক্রমে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য এবং জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৭ সাল থেকে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ রেডক্রস (বর্তমানে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট) সোসাইটির নির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। একাধারে বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা সমিতির (এফপিএবি) মহা-সচিব হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। শহীদ ময়েজ উদ্দিন আহমেদের রক্তে সিঁড়ি বেয়ে ধাপে ধাপে গড়ে উঠা প্রবল গণআন্দোলনে অবশেষে সামরিক শাসক ও শাসনের পতন ঘটে। গণতন্ত্রের জয় হয়। শহীদ ময়েজ উদ্দিন একজন দেশ প্রেমিক, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, প্রজ্ঞাবান রাজনীতিক, বিশিষ্ট সমাজসেবী ও সাধারণ জন কল্যাণে নিবেদিত প্রাণ মানুষ হিসেবে চির স্মরণীয় হয়ে আছেন। মুক্তি যুদ্ধের একজন সফল সংগঠক হিসেবে গৌরবময় ভূমিকা পালন করায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার তাঁকে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান স্বাধীনতা পদকে ভূষিত করেছেন।