ওয়াসিম শেখ, সিরাজগঞ্জ প্রতিনীধিঃ
সিরাজগঞ্জ উল্লাপাড়া এবং তাড়াশ উপজেলা চলন বিল অধ্যুসিত অঞ্চল বর্ষার পানিতে প্রতিদিন নতুন নতুন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। সেই সঙ্গে জীবন-জীবিকার জন্য অভাবীরা এ সময় বেছে নেয় অন্য পেশা। মাছ ধরার এক প্রকার যন্ত্র যার নাম খলসুনী । আবার কেউ কেউ স্থানীয় ভাষায় ধুন্দী বা চাঁই বলে থাকে। যাই যে নামেই ডাকুক না কেন মাছ সেই যন্ত্র তৈরির কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন এ এলাকার হাজার হাজার মানুষ। বাঁশ ও তালের আঁশ দিয়ে তৈরি করে বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি করছেন। এ অঞ্চলের তৈরি খলসুনী সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার প্রতাপ হাট সহ পার্শ্ববর্তী তাড়াশ রায়গঞ্জ উপজেলার নওগাঁ হাট, গুল্টা হাট, রায়গঞ্জের নিমগাছী, চান্দাইকোনার হাট, সলঙ্গা হাট, এসব হাটে পাইকারি ও খুচরা ক্রয়-বিক্রয় হয় খলসুনী। প্রতাপ হাটের খলসুনী ব্যবসায়ী নাসের আলী জানান, তাদের দাদার আমল থেকেই তারা এ কাজের সঙ্গে জড়িত। অনেকে নতুন করে আসছে এ পেশায় তাই দিন দিন এর সঙ্গে মানুষের সম্পৃক্ততা বাড়ছেই। উল্লাপাড়া উপজেলার প্রতাপ গ্রামের মুসলিম আলী জানান, তার গ্রামের প্রায় আড়াইশ’ পরিবার খলসুনী তৈরির কাজে জড়িত। আর আকারভেদে প্রতি জোড়া খলসুনীর দাম ৫০০ টাকা। কখনও কখনও এর চেয়েও বেশি। আকারের ওপর নির্ভর করে নির্ধারণ করা হয় দাম। এক জোড়া খলসুনী তৈরিতে সময় লেগে যায় প্রায় দু’তিন দিন। উপকরণ বাবদ খরচ হয় ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। তাড়াশ উপজেলার নওগাঁ হাটে বিক্রি করতে আসা ব্যবসায়ী বাহেস আলী বলেন, হাটের ইজারাদাররা খাজনা বেশি নেয়ায় ক্রেতা, বিক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ইজারাদারদের মাঝে মাঝে ঝগড়া বেঁধে যায়। খলসুনী ক্রেতা বেল্লাল হোসেন জানান, এ বছর চলনবিলে পানি আসতে শুরু করেছে। প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকাসহ চলনবিলের মাঠ ডুবে যাচ্ছে। সেই ক্ষেতে কাজ নেই, তাতে কী? জীবনযুদ্ধে খেটে খাওয়া মানুষগুলো হারতে নারাজ। তাই বর্ষাও পানিতে মাছ ধরার জন্য খলসুনী ক্রয় করছে অনেকেই। তারা খলসুনী দিয়ে মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে।