রাজবাড়ী প্রতিনিধিঃ
 রাজবাড়ীর পাংশা থানা পুলিশ ও র‌্যাবের যৌথ অভিযানে বিয়ে করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক প্রতারককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এবিষয়ে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে ২৩ শে ডিসেম্বর শনিবার দুপুর ১২টায় প্রেসব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়।
এতে বক্তব্য দেন পুলিশ সুপার জি. এম. আবুল কালাম আজাদ। এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার) রেজাউল করিম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম ও অপস্) মুকিত সরকার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদী সার্কেল) মো. ইফতেখারুজ্জামান, সহকারী পুলিশ সুপার (পাংশা সার্কেল) সুমন কুমার সাহা, বিশেষ শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার দত্ত চৌধুরী প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশ সুপার জি. এম. আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমরা মোট ছয়টি বিয়ের বিস্তারিত তথ্য পেয়েছি। তবে ওই ব্যক্তির এলাকাবাসীর ধারণা বিয়ের সংখ্যা ২০ এর অধিক। এসব বিয়ে করার ঘটনায় তিনি মোট এক কোটি ৬৩  লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এর সঙ্গে একটি  বড় চক্র রয়েছে। আমরা পুরো চক্রটিকে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করছি।
ওই ব্যক্তির নাম আবুল কালাম আজাদ ওরফে শাহরিয়ার নাফিজ ইমন ওরফে বুলবুল (৩৫)। তাঁর বাড়ি চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার বড় দুধপাতিলা গ্রামে। তাঁর বাবার নাম আয়নাল হক।
পুলিশ জানায়, আবুল কালাম আজাদ নিজেকে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী সরকারি অডিট অফিসার হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেন। তিনি রাজবাড়ী, ফরিদপুর, যশোর, পাবনা, ঝিনাইদহ ও চুয়াডাঙ্গার দায়িত্বে আছেন পরিচয় দিয়ে পাংশার এক কলেজ শিক্ষার্থীর (আশা) সঙ্গে বন্ধুত্ব করেন। তিনি তাকে ৭ মার্চ বিয়ে করেন। বিয়ের পর ভাইয়ের চাকুরি দেওয়ার কথা বলে আট লাখ টাকা নেন। ২৭ আগস্ট মেয়েটিকে ফরিদপুরে নিয়ে বিক্রির চেষ্টা করেন। মেয়েটি বিষয়টি বুঝতে পেরে সেখান থেকে চলে আসেন। এরপর বিভিন্ন ভাবে প্রতারণার  বিষয়টি বুঝতে পেরে ১৮ সেপ্টেম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে পাংশা থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ও র‌্যাবের যৌথ উদ্যোগে তাকে নাটোর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আবুল কালাম আজাদ বলেন, তিনি চুয়াডাঙ্গায় কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে চাকুরি করতেন। তার পোস্টিং চুয়াডাঙ্গায় হলে তিনি ঢাকা প্রধান কার্যালয়ে দায়িত্ব পালন করতেন। একটি নিয়োগের ঘটনায় চাকুরী প্রার্থীদের কাছ থেকে ঘুষ লেনদেন হয়। তিনি এই ঘুষের টাকার মাধ্যম ছিলেন। তৎকালানীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব আবুল কালাম আজাদকে এক কোটি ২০ লাখ টাকা দেন। এরমধ্যে থেকে তিনি নয় লাখ টাকা কমিশন পান। কিন্তু প্রথম আলোতে এঘটনায় নিউজ প্রকাশিত হয়। এতে সবার নিয়োগ বাতিল হয়ে যায়। কিন্তু তাকে ঘুষের টাকা পরিশোধ করতে হচ্ছে। তিনি ঘুষের টাকা পরিশোধ করার জন্য বিভিন্ন স্থানে বিয়ে করেন। বিয়ে করার পর চাকুরি দেওয়ার কথা বলে টাকা নেন। এক পর্যায়ে সটকে পড়েন। এখন পর্যন্ত তিনি মোট ছয়টি বিয়ে করেছেন।
তিনি বলেন, ওই ঘটনার আগে আমি খুব ভাল ছিলাম। আমাকে সবাই বিশ্বাস করতো। কিন্তু চাকুরির নিয়োগ বাতিল হওয়ায় আমি প্রতারণার আশ্রয় নেই। চাকুরি প্রত্যাশিরা আমার বাড়িতে গিয়ে ঝামেলা করতো। আমি বিয়ে করে টাকা সংগ্রহ করে এসব টাকা পরিশোধ করি।