রাজবাড়ী প্রতিনিধিঃ
কালোবাজারিরা দেশকে ধ্বংস করতে চায়। রেলকে ধ্বংস করতে চায়। তারা নিশ্চয়ই অন্য কারোর সহযোগিতায় এসব করে থাকে। তাদের কাছ থেকে আপনারা কেই টিটিক কিনবেন না। রাজবাড়ীতে জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শহিদ স্মৃতিফলকে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন রেলপথ মন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম এমপি।
পরে তিনি জেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত রাজবাড়ী অফিসার্স ক্লাবে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান করেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. জিল্লুল হাকিম বলেন, আমি প্রতিবছরই একটা লোভে এই অনুষ্ঠানটিতে আসি। সেটা হল সবার সাথে যে দেখা সাক্ষাৎ হয়। কে কোথায় হাড়িয়ে যাবে তার কোন ঠিকানা নেই। পাশে দাড়িয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছি তাদের মধ্যে অনেকেই নেই। পাংশাতে মুক্তিযোদ্ধা সবচাইতে বেশি ছিল। আজকে পাংশাতে দেখলাম জীবিত মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা খুবই কম । আমরাতো কেউ থাকবো না। আমি মুক্তিযোদ্ধা ভাতা বাড়ানোর সময় সংসদে বলেছিলাম এমন একটা দিন আসবে যখন হারিকেন জ্বালিয়েও কোন মুক্তিযোদ্ধাদের খুঁজে পাওয়া যাবে না। কয়জন মুক্তিযোদ্ধা দেশে আছে। তাদের ভাতা বাড়ানো হবে না কেন। আমরাতো ভাতার জন্য যুদ্ধ করতে যাইনি। আমরা যুদ্ধে গিয়েছিলাম বঙ্গবন্ধুর ডাকে সারাদিয়ে এই দেশটাকে স্বাধীন করার জন্য।
তিনি আরও বলেন রাজবাড়ী রেলের শহর । রাজবাড়ী অনেক কিছু আছে। রাজবাড়ী শহরের অর্ধেকের বেশি এলাকা রেলের । কিন্তু ক্রমান্বয়ে রাজবাড়ী থেকে রেল হারিয়ে যাচ্ছে। আগে লোকোশেড ছিল। এখন লোকোশেড নেই। রেলের অধিকাংশ রেলের জায়গা বেহাত হয়ে গেছে। রেলের কোর্য়াটারগুলো বেদখল হয়ে আছে। রেল ভাড়া পায়না। রাজবাড়ীকে পুনরায় রেলের শহর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা রেল মন্ত্রী হিসেবে আমার কাজ। আমি প্রথম যেদিন ট্রেনে চড়ে রাজবাড়ী আসলাম। রাজবাড়ীতে নেমে আমার মনটা অনেক খারাপ হয়ে গিয়েছিল। আমি প্রথমেই বলেছি রাজবাড়ী স্টেশনে নতুন ভবন নির্মাণ হবে। এখানে যাত্রীদের সুযোগ সুবিধা বাড়াতে হবে। যাত্রীদের নিরাপত্তা বাড়াতে হবে। রেল ভবনের ডিজাইন হচ্ছে। ডিজাইন হলে খুবই দ্রুত টেন্ডার হবে।  রেলে ইদের আগে ১৫ লাখ মানুষ ট্রেনে চড়ে বাড়ি যেতে যায়। আমাদের সামর্থ আছে ৩০ হাজারের। সবাইকে তো আর জায়গা দিতে পারবো না। আমাকে রেলমন্ত্রী করার পর যারা টিকিট কালোবাজারি করে এরকম কয়েকটি সিন্ডিকেট আমরা ধরতে পেরেছি।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক আবু কায়সার খানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য দেন, পুলিশ সুপার জিএম আবুল কালাম আজাদ, সিভিল সার্জন ইব্রাহিম টিটন, সাবেক জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ফকীর আব্দুল জব্বার, বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজ আহম্মেদ, বাকাউল আবুল হাসেম। সভা পরিচালনা করেন আবুল হোসেন কলেজের সহকারী অধ্যাপক শামীমা আক্তার মুনমুন ও জেলা শিল্পকলা একডেমির কালচারাল অফিসার পার্থ প্রতিম দাস ।
এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে সকালে রেলগেইট শহিদ স্মৃতি ফলকে বিভিন্ন জেলা প্রশাসন, আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ জাতীওতাবাদী দল (বিএনপি), কমিউনিস্ট পার্টি, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, নাগরিক কমিটি, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন পুষ্পমাল্য অর্পণ করে।