রাজবাড়ী প্রতিনিধিঃ
রাজবাড়ীতে বিআইডব্লিউটিসির বিরুদ্ধে দৌলতদিয়া ঘাটে যানবাহন থেকে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) আসন্ন ঈদে যাত্রী সাধারণের যাতায়াত নির্বিঘ্নে করার লক্ষে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভায় দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান এই অভিযোগ করেন।
আব্দুর রহমান বলেন, “দৌলতদিয়া ঘাট এক সময় চাঁদাবাজিদের আখরা ছিল। আমি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়া পর সেটা অনেকটা কমে এসেছে। তবে বিআইডব্লিউটিসির ছত্রছাঁয়ায় এখনও চাঁদাবাজি চলমান আছে। একটি গাড়ি পারাপারের ফেরির ভাড়া যদি হয় ১হাজার ৫০০টাকা। বিআইডব্লিটিসি কমপক্ষে ১০০ টাকা বেশি নেয়। প্রতিদিন ১০০টি গাড়ি পার হলে ১০ হাজার টাকা অতিরিক্ত হয়। আর যদি প্রতিদিন ১ হাজারটি গাড়ি পার হয় তাহলে ১লাখ টাকা হয়। এভাবেই প্রতিদিন দৌলতদিয়া ঘাটে বিআইডব্লিউটিসি চাঁদাবাজি করে আসছে। তিনি আরও বলেন ওখানে দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যের মাধ্যমে টাকা নেওয়া হয়। দিন শেষে হিসাব করে সব টাকা ক্যাশিয়ারের কাছে জমা দেওয়া হয়। এ বিষয়ে আমি অনেকবার বলেছি। তারা কোন কর্ণপাত করেন নি। তিনি এই চাঁদাবাজি বন্ধ করার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।”
সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক আবু কায়সার খান। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোছাঃ মোরশেদা খাতুনের সঞ্চলানায় বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. ইফতেখারুজ্জামান, গোয়ালন্দ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র, গোয়ালন্দ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রাণবন্ধু চন্দ্র বিশ্বাস, দৌলতদিয়া বিআইডব্লিউটিসির ব্যবস্থাপক জিল্লুর রহমান, বিআইডব্লিউটিএর আরিচা অঞ্চলের বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা এস এম সাজ্জাদুর রহমান।
রাজবাড়ী বিআইডব্লিউটি এর ব্যবস্থাপক জিল্লুর রহমান বলেন, বর্তমানে ছোটবড় মোট ১৩টি ফেরি চলাচল করছে। ঈদ উপলক্ষে আরও দুটি ফেরি বাড়ানো হবে। ঘাট এলাকায় চাঁদা বাজির সাথে বিআইডব্লিউটি এর কোন কর্মচারী জরিত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।তিনি চাঁদাবাজি বন্ধে সকলের সহযোগিতা চান।
সভায় আসন্ন ঈদে দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে ঈদ যাত্রীরা যাতে নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরতে পারে এবং ঈদের ছুটি শেষে মানুষ যাতে নিরাপদে কর্মস্থলে ফিরতে পারে সেজন্য প্রশাসন কিছু কর্মপরিকল্পনা করেছে। ঈদের আগে ৫ দিন ও ঈদের পরে ৫ দিন দৌলতদিয়া যাত্রীবাহী নৌযানে সকল প্রকার মালামাল বহন বন্ধ থাকবে। এছাড়া ঈদের আগের তিন দিন ও পরের ৩ দিন নিত্যপ্রয়োজনীয় ও পঁচনশীল পণ্য ব্যতিত সকল প্রকার মালবাহী ট্রাক ফেরিতে পারাপার বন্ধ থাকবে। ৬ এপ্রিল হতে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত নদীতে সকল ধরণের বালুবাহী বাল্পহেড চলাচল বন্ধ থাকবে। সাধারণ মানুষের বাসের ভাড়া নিয়ে বিভ্রান্ত এড়াতে প্রতিটি বাসের টিকিট কাউন্টারের সামনে বাসের ভাড়ার তালিকা টানিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।