মোঃ ওবায়েদুর রহমান সাইদ শরীয়তপুর প্রতিনিধিঃ

শরীয়তপুরে রাতের আঁধারে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আগুনে পুরো কার্যালয়টি পুড়ে ছাই হয়ে গিয়াছে দলীয় সূত্র জানা যায়, সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে শরীয়তপুর সদর উপজেলার বালাখানা নামক স্থানের পালং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে অগ্নিকাণ্ডের এ ঘটনা ঘটে। পরে ফায়ার সার্ভিসের দুইটি টিম এসে দীর্ঘসময় চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়, সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার পালং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ধরে বালাখানা নামক স্থানে ভাড়ায় একটি দোকান ঘর নিয়ে দলীয় কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করে আসছিলো। কয়েক দিন আগে স্থানীয় কিশোর ছেলেদের দু’টি গ্রুপের মধ্যে মোটরসাইকেল সাইড দেয়া নিয়ে হাতাহাতি হয়। স্থানীয়রা বিষয়টি মিমাংসা করে দিবেন বলেও আশ্বাস দিয়েছিলেন।ধারণা করা হচ্ছে, ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই সোমবার দিবাগত রাতে হয়তোবা কেউ কার্যালয়টিতে আগুন লাগিয়ে দিয়ে থাকতে পারে। রাত গভীর হওয়ায় কেউ টের না পেলেও সড়কে চলাচলকারী গাড়ি চালকরা ডাকাডাকি করলে স্থানীয়রা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে ফায়ার সার্ভিসের দুইটি টিম এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে নেয়।
আগুনে আশেপাশের কোনও প্রতিষ্ঠানের ক্ষয়ক্ষতি না হলেও কার্যালয়ে থাকা চেয়ার, টেবিল ও টিভির পাশাপাশি অন্যান্য আসবাবপত্রসহ পুরো ঘরটি পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এই ঘটনায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও সকল অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ বিরাজ করছে। সকালে ক্ষতিগ্রস্থ কার্যালয়টি পরিদর্শনে এসে মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।
পালং ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মিরাজ হাসান আমাকে বলেন, গত রাতে কে বা কারা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে। কার্যালয়ের ভেতর অপু ভাইয়ের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ছিলো, সেগুলোও পুড়ে গেছে। পরিকল্পনা করেই দুর্বৃত্তরা আগুন দিয়েছে। আমরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের পাশাপাশি দোষীদের সঠিক বিচার দাবি করছি।পালং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর পেদা বলেন, দলীয় কার্যালয়ে কে বা কারা আগুন দিয়েছে, তা এই মুহুর্তে বলতে না পারলেও এটা নিশ্চিত যে পরিকল্পনা করেই আগুন দেওয়া হয়েছে। কারণ দলীয় কার্যালয়টি ছাড়া আশেপাশের কোনো ঘরের কোনো ক্ষতি হয়নি। অথচ কার্যালয়টি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ এসেছেন, তাদের সঙ্গে আলাপ করে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।শরীয়তপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বলেন, কয়েকদনি আগে স্থানীয় কিশোর ছেলেদের মধ্যে একটি বিষয় নিয়ে হাতাহাতি হয়। সাধারণত ছোটদের এই সমস্ত ঝামেলা নিয়ে পরবর্তীতে বড়দের মধ্যে দ্বন্ধ শুরু হয়। বিষয়টি এক পর্যায়ে দলীয় পর্যায়ে চলে যায়। আমরা সরাসরি না দেখলেও ধারণা করছি ওই বিষয়টিকে কেন্দ্র করেই কেউ আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে।ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স শরীয়তপুরের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন কর্মকর্তা শংকর বিশ্বাস বলেন, গতকাল রাত ৩ টা ২০মিনিটে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে ফায়ার সার্ভিসের দুইটি টিম। আগুনের সূত্রপাত কীভাবে হয়েছে তা তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে। ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিতে দেরি হওয়ায় পুরো কার্যালয়টি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, গতকাল রাতে পালং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আগুন লেগেছে এমন খবর পেয়ে দায়িত্বরত মোবাইল টিম ঘটনাস্থলে গিয়েছিলো। তবে এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। কেউ অভিযোগ করলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।