ওয়াসিম শেখ, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ

সিরাজগঞ্জের নাবিক নাজমুল হক হানিফসহ বাড়ি ফিরলেন সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজ এর ২৩ নাবিক।
বুধবার (১৫ মে ২০২৪ইং) সকালে সিরাজগঞ্জে নিজ গ্রামে এসে পৌছেছেন নাবিক নাজমুল হক হানিফ। এর আগে দীর্ঘদিন সোমালিয়ান জলদস্যুদের বন্দীদসা থেকে মুক্ত হয়ে ১৪ এপ্রিল রাতে চট্রগ্রাম থেকে রওনা হয়ে আজ সকালে নিজবাড়ী সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার চর-নুরনগর গ্রামের আবু সামা ও নার্গিস খাতুন দম্পতির পরিবারের কাছে ফিরে আসে। ছেলেকে কাছে পেয়ে দুই গালে ভালোবাসার চুমুতে ভরিয়ে দেন মাতা নার্গিস খাতুন। তাদের উচ্ছ্বাস যেন খুশির বাঁধ ভেঙেছে।

নাজমুলের বাবা আবু সামা বলেন, সুস্থভাবে আমার ছেলে নাজমুল হকসহ ২৩ নাবিক দেশে ফিরিয়ে আনায় বাংলাদেশ সরকার ও জাহাজ কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে।

নাজমুলের মা নার্গিস বেগম বলেন, দিন-রাত ছেলের ছবি এবং মোবাইলে কোনো সংবাদ এলো কিনা এই চিন্তায় বসে থেকেছি। প্রতীক্ষার প্রহর যেন শেষ হতে চাইছে না। নাজমুল অপহরণ হওয়ার পর থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন ওর বাবা। আজ ছেলেকে ফিরে পেয়েছি।
তিনি আরও বলেন, ঈদের দিন কিভাবে কেটেছে বলতে পারবো না। ছেলে বাড়িতে ফিরে এসেছে। এখন আমাদের ঈদ। আমি ঈদের সব কিছুই আজ রান্না করবো। ছেলের সঙ্গে বসে খাবার খাব।
নাজমুল হক বলেন,জিম্মিকালে প্রতিটি মুহূর্ত কেটেছে মৃত্যু আতঙ্কে। বন্দুক হাতে টহল দিত দস্যুরা। ৩৩ দিন যে কীভাবে কেটেছে, তা ব্যাখ্যা করতে পারব না। ভেবেছিলাম মা-বাবার মুখ আর দেখা হবে না। আজ বাড়িতে ফিরতে পেরে এই আনন্দ প্রকাশের ভাষা ছিল না আমার। শুধু বলতে চাই, মা-বাবাকে কাছে পাব, এর চেয়ে আর বড় সুখ কী হতে পারে। এই দিনের অপেক্ষায় ছিলাম। আল্লাহ আমাদের কথা শুনেছেন।

গত মঈলবার (১২ মার্চ২০২৪ইং) সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে ভারত মহাসাগর থেকে জিম্মি হন বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর ২৩ জন নাবিক। এদের মধ্যে বন্দি জাহাজের ক্রু হিসেবে ছিলেন সিরাজগঞ্জের নাজমুল হক। জাহাজটি অপহরণের পর থেকে নাজমুলের ফিরে আসার অপেক্ষায় ছিলেন মা-বাবা, বোনসহ স্বজনেরা। গত (১৪ এপ্রিল) ভোরে জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্ত হন এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজসহ ২৩ নাবিক। এরপর জাহাজটি পৌঁছে দুবাইয়ের আল হামরিয়া বন্দরে। সেখান থেকে মিনা সাকার নামের আরেকটি বন্দরে চুনা পাথর ভর্তি করার পর চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। সব মিলিয়ে ৬৫ দিন পর মুক্ত নাবিকরা বাংলাদেশে ফিরেছেন।