মোঃ ইসমাঈল হোসেন, বগুড়া প্রতিনিধিঃ

বগুড়া আদমদিঘী উপজেলায় গত ১০ জুলাই মেয়ের জামাই রাসেল কর্তৃক লোহার বেড়ীর আঘাতে শ্বাশুড়ী জাবেদা বেগম (৬২) কে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এদিকে এই হত্যার ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে বগুড়া র‌্যাব-১২ ও গাইবান্ধা র‌্যাব-১৩ এর যৌথ অভিযান পরিচালনা করে হত্যাকারী জামাই রাসেলকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে ।

বগুড়া র‌্যাব-১২ এর প্রেস ব্রিফিং থেকে জানা যায় নিহত জাবেদা  বেগম (৬২) আদমদীঘি উপজেলার মিতইল গ্রামের মৃত সোলাইমান আলীর স্ত্রী।১১জুলাই সকাল ১১ ঘটিকায় বগুড়া র‌্যাব-১২,এক প্রেস  বিজ্ঞপ্তিতে র‌্যাবের পুলিশ সুপার মীর মনির হোসেন জানান ১০ জুলাই আদমদীঘি থানায় নিহত জবেদা বেগমের ভাই তবিবুর রহমান, এই মর্মে অভিযোগ দায়ের করেন যে- অভিযুক্ত আসামি জামাই রাসেল আমার ভাগ্নীকে নিয়ে স্বপরিবারে আমার বোনের বাড়িতে বসবাস করতেন। আমার বোন নিহত জবেদা বেগম এর নামে ৫৭ শতক জায়গা থাকায় আসামী  রাসেল তা বিক্রয় করার জন্য দীর্ঘদিন যাবৎ আমার ভাগ্নিকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করে আসছিল।

এমনতা অবস্থায়, আসামি রাসেল ১০ জুলাই কাজের উদ্দেশ্যে বাহির হন এবং দুপুর ১টায় বাসায় ফেরেন। বাসায় এসে আসামি তার স্ত্রী কাছে খাবার চাইলে একপর্যায়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয় ও মারামারীর এক পর্যায়ে আসামি রান্নাঘরে থাকা লোহার বেড়ী দিয়ে তার স্ত্রীকে আঘাত করতে থাকে।

এমন অবস্থা দেখে শাশুড়ি জাবেদা বেগম আগাইতে আসলে আসামী রাসেলের হাতে থাকা বেড়ী  দিয়ে শাশুড়ির গলায় আঘাত করে যা গলার ভেতরে প্রবেশ করে অবস্থা বেগতিক দেখে আসামি রাসেল ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।

এরপর নিহত জাবেদার মেয়ে চিৎকার করলে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে জাবেদা বেগমকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছার আগেই জাবেদা বেগমের মৃত্যু হয়।

নিহত জাবেদা বেগমের ভাই তবিবুর রহমানের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আদমদীঘি থানায় একটি মামলা রুজ হয়, যার ধারাবাহিকতায় র‍্যাব ১২ সি পি এস সি বগুড়া আসামীকে ধরতে গোয়েন্দা তৎপরতা শুরু করেন।র‌্যাব-১২ বগুড়া গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন, আসামি বর্তমানে গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা থানায় অবস্থান করছেন।

এরই প্রেক্ষিতে ১১ জুলাই রাএী আনুমানিক ১২:৩০ মিনিটে র‌্যাব-১২ বগুড়া ও র‌্যাব-১৩ গাইবান্ধা এর যৌথ অভিযানে গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা থানাধীন হাজীপাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামি রাসেল (২৮), পিতা মো: সেলিম, সাং-মিতইল, থানা আদমদিঘী জেলা বগুড়া কে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন।

র‌্যাবের এ কর্মকর্তা আরো জানান, জিজ্ঞাসাবাদে রাসেল বলেন, রাসেলের পরিবারের সাথে রাসেলকে যোগাযোগ করা তার স্ত্রী ও শাশুড়ি পছন্দ করতেন না।

ঘটনার দিনে রাসেল তার ভাবির জন্য গ্যাসের ট্যাবলেট কিনতে হবে এরকম একটি কথা বলেছিলেন। এই কথাতেই তাদের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয় এবং তার স্ত্রী ও শাশুড়ি মিলে তাকে আক্রমণ করে। আসামি রাসেল সেও পাল্টা আক্রমণ করে এবং ঘটনাটি ঘটে।

এ বিষয়ে, র‌্যাবের পুলিশ সুপার  কোম্পানী কমান্ডার, মীর মনির হোসেন সিপিএসসি, র‌্যাব-১২ জানান, দপ্তরির কার্যক্রম শেষে গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বগুড়া আদমদীঘি থানায় হস্তান্তর করা হবে।