মোঃ ইসমাঈল হোসেন, বগুড়া সদর প্রতিনিধিঃ

বর্ষাকালে গ্রামের কাঁচা রাস্তাগুলো খানাখন্দ, গর্ত ও কর্দমাক্ত হয়ে যায়। এতে করে দুর্ভোগ পোহাতে হয় জনসাধারণের। আর এসব ব্যপারে নজর নেই জনপ্রতিনিধিদেরও। তেমনি অবহেলিত বগুড়া কাহালু উপজেলার মালঞ্চা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড ঢাকন্দা থেকে ৭নং ওয়ার্ড ভেটিসোনায় গ্রাম পর্যন্ত ১.৫ কি: মি: কাঁচা রাস্তাটির বেহাল দশা এ যেন দেখার কেহ নেই।
দেখলে মনে হবে, এটি রাস্তা নয় ধানের চারা রোপণের জন্য হাল চাষ করা হয়েছে। রাস্তাটির এমনই বেহাল দশা যে কোনো গাড়ি চলাচলতো দূরের কথা সাধারণ মানুষের হেঁটে চলাচল করা কষ্টসাধ্য।প্রতিনিয়তই চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন স্থানীয় জনসাধারণ।এলাকা ঘুরে জানা যায় এই ১.৫ কি:মি: রাস্তায় ২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,১টি ভূমি অফিস,১টি কওমি ও ভেটিসোনাই কল্যাণ পাড়ায় ১টি আলীয়া সিনিয়র আলোম মাদ্রাসা রয়েছে। এ ২টি গ্রামে প্রায় ৫ হাজার লোকের বসবাস এবং রয়েছে বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থী।কোন মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না। এতে করে স্থানীয় জনসাধারণের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।

এ বিষয়ে ২ নং ওয়ার্ড ঢাকন্তা গ্রামের চা-দোকানদার সেলিম হোসেনের সঙ্গে কথা হলে, তিনি জানান-গত একমাস ধরে এভাবে রাস্তাটি খনন করে রেখেছে, ফলে আমাদের চলাচল করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।তিনি আরো জানান এর আগে দীর্ঘদিন যাবৎ রাস্তায় ইটপাড়া থাকলেও রাস্তার অবস্থা ছিল খুব খারাপ, আমাদের চলাচল করতে কষ্ট হতো।

ঢাকন্তা গ্রামের আরেক প্রবীণ মানুষ আলহাজ্ব মকবুল হোসেনের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান-দীর্ঘ ১৫/১৬ বছর ধরে এই রাস্তাটি ইট দিয়ে সোলিং অবস্থায় ছিল তাও আবার খুব খারাপ অবস্থা।এ রাস্তায় সহজে অটো/ভ্যানসহ কোন গাড়ী আসতে চান না।ফলে ধান, চাল আলু বাজারে নিয়ে যাওয়া আমাদের জন্য কষ্ট সাধ্য হয়ে পড়েছে আমরা কোন বাজার-ঘাট করতে পারছি না , আবার রাস্তা কার্পেটিং করার নামে ইট তুলে গত দুই মাস ধরে ফেলে রেখেছেন, ফলে আমাদের দুর্ভোগ আরো বেড়ে গেছে ।পুরো বর্ষায় কাদামাটি মাড়িয়ে রাস্তা দিয়ে চলাচল করা আমাদের জন্য চরম কষ্টের। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলে রাস্তা পানির নিচে ডুবে থাকে, পানি সরে গেলে রাস্তা কাঁদা হয়ে যায়। ছেলেমেয়েদের স্কুল-কলেজে যেতে কষ্ট হয়, অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে নিতে হলে কোলে করে নিতে হয়। রাস্তার বিষয়ে অনেকবার স্থানীয় মেম্বার, ইউপি চেয়ারম্যান, এমনকি আমার সম্পর্কে আত্মীয় সাবেক উপজেলার চেয়ারম্যান হাসিবুল আলম (সুরুজ) তিনি প্রথম উপজেলার চেয়ারম্যান হলে তাকে আমাদের গ্রামে নিয়ে এসে সংবর্ধনা দিয়ে রাস্তা সম্পর্কে অবহিত করি তিনিও আশ্বাস দিয়ে গিয়েছেন এরপর দ্বিতীয়বার উপজেলার চেয়ারম্যান হয়েছেন কিন্তু রাস্তার ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেননি।

এ বিষয়ে ঢাকন্তায় অবস্থিত মালঞ্চা ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা মোছাঃ সালমা আক্তার জানান, অফিসে আসতে আমার খুব কষ্ট হয় এ বিষয়ে কাহালু উপজেলা কর্মকর্তা মহোদয় সহ জনপ্রতিনিধিদের একাধিকবার অবহিত করেও কোন লাভ হয় নাই।

এসময় মাদ্রাসা থেকে বাড়ি ফেরার পথে কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা হলে তারা একই কথা জানান, তাদের মধ্যে মোছা: মাহমুদা আক্তার নামে একজন শিক্ষার্থী বলেন-আমাদের প্রত্যহ মাদ্রাসায় যেতে খুব কষ্ট হয়, রাস্তা খারাপ হওয়ার কারণে নির্দিষ্ট সময়ের চেয়ে অনেক সময় আগে বের হতে হয়, এর ফলে আমাদের অনেক সময় অপচয় হচ্ছে, আমরা আপনাদের মিডিয়ার মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করছি।

এ বিষয়ে মালঞ্চা ইউপি চেয়ারম্যান জনাব নেছার উদ্দীনের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান-আমি বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ সাবেক এমপি রেজাউল করিম তানসেন, কাহালু উপজেলা প্রকৌশলী মোখলেসুর রহমান মহোদয়ের শরণাপন্ন হয়েছি। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য আমি বিএনপি’র রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হওয়ায়, তারা আমার এ অভিযোগগুলো আমলে নেয় নাই।