রাজবাড়ীঃ
রাজবাড়ীর পদ্মা নদীতে বালু উত্তোলন ও চাঁদাবাজীকে কেন্দ্র করে আধিপত্য বিস্তারের ঘটনায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলায় উভয়পক্ষের মোট পাঁচজন আহত হয়েছে। আহতদের রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
আজম মন্ডল ও টুকু মিজির অনুসারীদের মধ্যে এই হামলার ঘটনা ঘটে। আজম মন্ডল রাজবাড়ী জেলা পরিষদের সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান। তিনি মিজানপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহসভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। টুকু মিজি মিজানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউপি আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক।
আজমের অনুসারীদের মধ্যে আহতরা হলো টিউলিফ (৪৩), ফারুক (৪০), আরিফ (৩২) ও আরিফুল হক। এছাড়া টুকু মিজির অনুসারি শরীফ উল্লাহ (৩৪) আহত হন। আহতদের রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজম মন্ডল ও টুকু মিজি যৌথ ভাবে পদ্মা নদীতে বালুর ব্যবসা করে আসছে। বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হন টুকু মিজি। এরপর থেকে আজমের সঙ্গে তাঁর দুরত্ব বাড়তে থাকে। জেলা পরিষদের নির্বাচনে বিজয়ী হন আজম মন্ডল। এরপর থেকেই তাদের মধ্যকার বিরোধ প্রকাশ্যে আসে। সম্প্রতি কয়েক দফায় উভয়পক্ষের অনুসারীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও হামলার ঘটনা ঘটছে।
আজম মন্ডল অভিযোগ করেন, অনেক দিন ধরে টুকু মিজির অনুসারীরা বালু উত্তোলন ও পরিবহন করার ক্ষেত্রে চাঁদাবাজি করতো। আমরা সম্প্রতি এসব চাঁদা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছি। একারণে মাঝে মধ্যেই আমাদের লোকজনের ওপর হামলা চালাচ্ছে। আজ সকালে হামলার বিষয়টি টের পেয়ে আমরা পুলিশকে অবহিত করি। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। পরে পুলিশ ফিরে আসার পর আমার লোকজনের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। কুপিয়ে আহত করা হয়েছে। গুলি ছোঁড়া হয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে ফারুক নামে একজনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
তিনি বলেন, টুকু মিজির বেয়াই দুলাল ও ভায়রা কামরুল ইসলামের নেতৃত্বে এই হামলা চালানো হয়। আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবে নিয়ম মেনে ব্যবসা করতে চাই। এবিষয়ে থানায় লিখিত ভাবে অভিযোগ দায়ের করার প্রস্তুতি চলছে।
অভিযোগ অস্বীকার করেছেন টুকু মিজি। তিনি বলেন, হামলার সময় আমি উপজেলা পরিষদে একটি মিটিংয়ে ছিলাম। আজম মন্ডলের লোকজন প্রথমে আমার লোকদের ওপর হামলা চালিয়েছে। পরে আমার লোকজনও পাল্টা হামলা চালায়।
রাজবাড়ী সদর থানার দায়িত্বরত উপপরিদর্শক (এসআই) মুরাদ হোসেন বলেন, হামলা বা মারধর করার কোনো ঘটনায় থানায় কেউ লিখিত ভাবে কোনো অভিযোগ দেয়নি।
রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ইনচার্জ আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, মারধর করার ঘটনায় পাঁচজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে কেউ গুলিবিদ্ধ হয়নি। আহতদের হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।