রাজবাড়ী ঃ
রাজবাড়ী সদর উপজেলার চন্দনী ইউনিয়নের ধাওয়াপাড়ায় পদ্মা নদীতে বালুর বাল্কহেডের এক শ্রমিককে আবারও গুলি করা হয়েছে। গুরুতর আহত শ্রমিককে ফরিদপুর ঊঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে গুলি করার ঘটনাটি ঘটে।
আহত শ্রমিকের নাম সানু হাওলাদার (৬২)। তাঁর বাড়ি বরগুনার নলী গ্রামে। সানুর বাবার নাম আইনুদ্দিন হাওলাদার। তিনি আজম মন্ডলের বাল্কহেডে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পদ্মা নদীতে আধিপাত্য বিস্তার কেন্দ্র কওে প্রায়ই গুলি ও হামলার ঘটনা ঘটছে। তিনটি পক্ষ আধিপাত্য বিস্তারের চেষ্টা করছে। একপক্ষের নেতৃত্ব দেন রাজবাড়ী জেলা পরিষদের সদস্য ও মিজানপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহসভাপতি আজম মন্ডল। আরেক পক্ষের নেতৃত্বে আছেন মিজানপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক টুকু মিজি। সম্প্রতি আজম মন্ডল ও টুকু মিজির অনুসারীদের মধ্যে একাধিকবার সংঘর্ষ হয়েছে। এসব ঘটনায় থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া পাবনার নাজিরগঞ্জের একটি চক্র প্রায় শ্রমিকদের ওপর গুলি চালিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এসব ঘটনায় বালু মহাল এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় সানু হাওলাদার সাংবাদিকদের বলেন, তিনি ধাওয়াপাড়া ঘাটের অদুরে পদ্মা নদীতে জেলা পরিষদ সদস্য আজম মন্ডলের বালু লোড করছিলেন। এসময় ট্রলার যোগে কয়েকজন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী তাদের বাল্ক হেডের কাছে আসে। এরপর এলোপাথারী ভাবে গুলি চালিয়ে চলে যায়। তাদের ছোঁড়া গুলি সমস্ত শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলিবিদ্ধ হয়। লোকজন উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে কাজ করছি।
আজম মন্ডল বলেন, আমার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমি জামিনের জন্য ঢাকায় আছি। কয়েক দিন ধরে আমার লোকজনের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে। মারধর করা হচ্ছে। গুলি করা হচ্ছে। মামলা দিয়ে হয়রানী করা হচ্ছে। আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবে এলাকায় থাকতে পারছি না। ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করতে পারছি না।
রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগে ইনচার্জ আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, আহত ব্যক্তির শরীরের অসংখ্য গুলি চিহ্ন রয়েছে। বিশেষ করে পিঠে অনেক গুলি লেগেছে। তাকে হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে। দুপুরেই তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
রাজবাড়ী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন বলেন, গুলিবিদ্ধ হওয়ার বিষয়ে কেউ থানায় কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।